ePaper

কাজিপুরে ফার্নিচার ব্যবসার প্রসারে পাল্টে গেছে ছালাভরা গ্রাম

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকেই গ্রামের মানুষজন শুরু করেছিলো ফার্নিচারের ব্যবসা। দিনের পর দিন এটি এত বেশি প্রসার লাভ করেছে এখন ফার্নিচারের নামেই হয়েছে গ্রামের নাম। দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে ফার্নিচার গ্রাম নামে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ছালাভরা গ্রাম। এই এলাকায় বাড়ি-বাড়ি ফার্নিচার কারখানা গড়ে ওঠায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৫ হাজার মানুষের। ছালাভরা এলাকায় প্রবেশ পথেই চোখে পড়বে কেউ কাঠ কাটছে, কেউবা কাঠের গায়ে ফুটিয়ে তুলছে শৈল্পিক কারুকার্য আবার কেউ কাঠ থেকে তৈরি করছে বিভিন্ন ডিজাইনের খাট, ডেসিনটেবিল, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। কয়েক বছরের মধ্যে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০০ ফার্নিচার কারখানা। প্রতিমাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ফার্ণিচার বিক্রি করেন ছালাভরা এলাকার ব্যবসায়ীরা। গুনগত মান ভালো হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে এই এলাকার ফার্ণিচারের চাহিদা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এসব আসবাব কিনতে ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ দেশের প্রায় সব জেলার পাইকাররা ছালাভরা গ্রামে আসে। এ ছাড়া গ্রামের কিছু ব্যবসায়ী তাদের তৈরি আসবাব নিয়ে রূপসা, নলিন, নাটুয়ারপাড়া, রতনকান্দি, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও ভূঞাপুর হাটে বিক্রি করেন। নদীতীরবর্তী হওয়ায় নৌকা বোঝাই দিয়ে ওই সব হাটে পণ্য নিয়ে যান তারা। সম্প্রতি ফার্নিচার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কারখানাগুলোতে শত শত কর্মীকে নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা দামের আসবাব তৈরি করা হয় কারখানাগুলোয়। কাঠের জোগান আসে টাঙ্গাইল, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও ময়মনসিংহ থেকে। ব্যবসায়ীরা বলেন, এখানকার তৈরি কাঠের ফার্ণিচারের দাম কম আর মান ভালো হওয়ায় চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এজন্য প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে ফার্ণিচারগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় প্রচুর কারখানা গড়ে ওঠায় স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্রদের বেকারত্ব দূর হয়েছে। সরকারীভাবে ঋণ সহায়তা পেলে এই ব্যবসার আরো বেশি প্রসার ঘটানো সম্ভব বলে জানান তারা। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান আকরামুল হক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে উদ্বুদ্ধ করানোর পাশাপাশি নতুন ব্যবসায়ীদের ব্যবসার প্রসার ঘটানোর জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *