ePaper

সিরাজগঞ্জে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় পাচ্ছেন না ভাতার টাকা

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বয়সের কারণে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় প্রায় ১২শ’ ভাতাভোগী পড়ছে বিড়ম্বনায়। পাচ্ছেন না ভাতার টাকা। তাড়াশ পৌর সদরের খাঁন পাড়ার আশি বছর বয়সি বৃদ্ধ মো. আবু বক্কর খাঁন প্রায় দেড় দশক হলো সরকারিভাবে আর্থিক সুবিধা বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর থেকে তিনি অদ্যবধি সে সুবিধা ভোগ করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতিক সময়ে বয়:বৃদ্ধ মো. আবু বক্কর খাঁন তার প্রাপ্য ভাতা স্থানীয় এজেন্ট ব্যাংকিকের ব্যাংক এশিয়া থেকে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় তা উত্তোলন করতে পারছেন না। মূলতঃ ব্যাংকে থাকা বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিলেও মিলছে না। বার বার চেষ্টার পরও তা না মেলায় ভাতার প্রাপ্য টাকা উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি ভাতার টাকা উত্তোলন করতে না পেরে অর্থ সংকটের সাথে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। একই অবস্থা তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ গ্রামের উত্তর পাড়ার মোছা. তছিরোনের। তিনিও জানান, পূর্বে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ মিললেও এখন তা মিলছে না। যার কারণে তিনিও ব্যাংকে বার বার ধর্ণা দিয়েও ভাতার টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। আর এ অবস্থা শুধু আবু বক্কর খাঁন ও তছিরোনের নয়। এ উপজেলা এলাকার বয়স্ক প্রায় ১১শ’ থেকে ১২শ’ জনের। এদিকে তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকার বয়স্ক ভাতা পান ৯ হাজার ৬০২ জন। প্রতিবন্ধী ভাতা পান ৫ হাজার ৭শ’ জন। বিধবা ৫ হাজার ৮৫১ জন, হিজড়া ১০ জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ৫০ জনসহ অনান্য মোট ২১ হাজার ৪২০ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। যাদের সবাই ব্যাংক এশিয়ার তাড়াশ উপজেলার ২০টি মতো এজেন্ট ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করে থাকেন। আর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোট ভাতাভোগীর মধ্যে তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকার মোট বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, বিধবা সরকারি আর্থিক সুবিধা পাওয়া বা ভাতাভোগী প্রায় ১১শ’ থেকে ১২শ’ জন বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় ভাতার টাকা তুলতে পারছেন না। যে কারণে তারা একদিকে আর্থিক সংকটে পড়েছেন। ব্যাংক এশিয়ার তাড়াশ শাখার এজেন্ট মামুনুর রহমান জানান, বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিলেও মিলছে না এদর মধ্যে বেশি বয়স্করা আছেন। মূলত বয়সের কারণে বা আঙ্গুলের ত্বক নষ্ট হলে কিংবা শীতকালে এমনটি হয়ে তাকে। যাদের সংখ্যা এ উপজেলার হাজারেরও বেশি। তবে আমরা উপজেলা সমাজসেবার কর্মকর্তার প্রত্যায়নে নমিনীর বা ভাতাভোগীর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে তা বায়োমেট্রিক মেশিনে সংযুক্ত করে গত তিন-চার মাসে আঙ্গুলের ছাপ না মেলা ৭শ’ থেকে ৮শ’ জন ভাতাভোগীর ভাতার টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করেছি। তাপরও এখনও অনেকেই বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দিলেও তা না মেলায় টাকা উত্তোলন করতে পারছে না। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, গত দুই মাসে প্রত্যায়ন প্রদানের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ না মেলা অনন্ত ২৫ থেকে ৩০ জন ভাতাভোগীর ভাতা উত্তোলনের ব্যবস্থা হয়েছে। এছাড়া নমিনীর বা ভাতাভোগীর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নতুন করে তা বায়োমেট্রিক মেশিনে সংযুক্ত করে আঙ্গুলের ছাপ না মেলা ভাতাভোগীর ভাতা পেতে ব্যাংকের মাধ্যমে সমাধানের কার্যক্রম চলমান আছে। যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করেন এ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *