ePaper

সাগরে ইলিশের দেখা মিলছে পাইকারি বাজারে কমছে দাম

সৌমিত্র সুমন, (পটুয়াখালী) কলাপাড়া

গত বৃহস্পতিবার থেকে সাগরে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। ইতোমধ্যে পাইকারি বাজারে এর দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো দাম কমছে না। ইলিশ ধরা পড়ায় গত দু’দিন ধরে মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর সহ কুয়াকাটায় অন্ততঃ দেড় শতাধিক আড়তে মালিক, কর্মচারী, জেলেদের ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার এবং মহাজনরা এসে বাজার ঘুরে ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে ইলিশ। মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, জৈষ্ঠ্য থেকে আশ্বিন মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। ইতিমধ্যে মৌসুমের অর্ধেকটা শেষ হলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে সাগরে কাংখিত কোন ইলিশ পায়নি জেলেরা। বর্তমানে আবহাওয়া পরিস্থিতি অনূকুলে থাকায় সাগর কিছু শান্ত। ফলে ছোট-বড় সকল ট্রলারের জেলেরা কম-বেশী পাচ্ছে ইলিশ। ফলে আড়ৎ গুলোয় কেউই যেন বসে নেই। কেউ ট্রলার থেকে তুলে দিচ্ছে ইলিশ, কেউ নিয়ে আসছেন আড়তে, কেউ ওজন দেয়ার কাজ করছে, কেউ আবার তা খাতায় তুলছেন। সব মিলিয়ে কারোর যেন ভাত খাওয়ার সময়টুকুও নেই। এমনই মন্তব্য করেছেন একাধিক আড়ৎ মালিকরা। এদিকে, পাইকারী বাজারে ইলিশের দাম কমলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ইলিশ। তবে খুচরা বাজারে এখনো বেশী দামে ইলিশ বিক্রি করায় ইলিশ প্রিয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রোববার পাইকারী বাজারে ঘুরে দেখা গেছে ১ কেজি থেকে তার উপরে প্রতিমন ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা দরে, ৬০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫৮ হাজার টাকায়, এছাড়া গোটলা ইলিশ ৩০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম যা বিক্রি হয়েছে ২১ হাজার ৫০০ টাকা মন দরে। যা গত ১০ দিন আগেও মন প্রতি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা বেশী ছিল। অপরদিকে, কলাপাড়া পৌরশহরের মাছ বাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ দিন আগে ১ কেজি সাইজের যে ইলিশ দু’হাজার তিন’শ টাকা ছিল, এখনও একই দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অনুরুপ অন্যান্য সাইজের ইলিশেও দামের তেমন কোন পার্থক্য নেই। এ ব্যাপারে বরুন কর্মকার নামে এক ক্রেতা জানান, পাইকারী বাজারে ইলিশ কমছে অথচ খুচরা বাজারে দাম সেই আগের মতই। ইলিশ কেনা সাধারন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। মো.তরিকুজ্জামান নামে এক শিক্ষক জানান, যাদের গোনা পয়সায় চলতে হয়, তাদের এখন আর ইলিশ কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই। যাও মাছ ধরা পড়ে তাও আবার বাহিরের পাইকারেরা চড়া দামে কিনে নিয়ে যায়। আমরা কিনবো কেমনে। এদিকে, মহিপুর মৎস্য বন্দরের হাওলাদার ফিসের সত্বাধিকারী আ, জলিল হাওলাদার বলেন, পাইকারী বাজারে গত এক সপ্তাহ আগে ইলিশের যে দাম ছিল, তার থেকে মন প্রতি ২০ হাজার থেকে কোন কোন সাইজ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। এভাবে মাছ পড়লে আমরাও পিছনের লচ মেকাপ করতে পাড়ব, আর সাধারণ মানুষও ইলিশ কিনে খেতে পাড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *