প্রত্যাবর্তনেই ম্যাচসেরা নেইমার! দীর্ঘ ১২ বছর পর শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে প্রমাণ করলেন, তিনি এখনো বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা। গতকাল বোতাফোগোর বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই চমৎকার পারফরম্যান্স দেখান ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। দারুণ এক গোলের সুযোগ তৈরি করে ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পান তিনি। যদিও সান্তোস জয় পায়নি, তবে ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটি নেইমারের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নেইমারের প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত
সান্তোসের ঐতিহাসিক ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে হাজারো সমর্থকের সামনে মাঠে নামেন নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বদলি হিসেবে খেলায় নামলে পুরো স্টেডিয়াম করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। তাঁর জায়গা করে দিতে বেরিয়ে যান ২০ বছর বয়সী প্রতিভাবান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার গ্যাব্রিয়েল বোনতেম্পো, যাকে অনেকেই ‘নতুন নেইমার’ হিসেবে দেখছেন। মাঠে নামার পরপরই নেইমারের স্পর্শে সান্তোসের আক্রমণভাগ নতুন প্রাণ ফিরে পায়। প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করেন এবং নিজের কারিশমা দেখিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন।

নেইমারের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নেইমার বলেন, “সান্তোসকে আমি ভালোবাসি। আজকের রাত আমার জীবনের অন্যতম আবেগঘন মুহূর্ত। তবে আমি এখনো পুরোপুরি ফিট নই। আরও কিছু ম্যাচ খেলতে হবে, আশা করি চার-পাঁচ ম্যাচের মধ্যেই শতভাগ ফিট হয়ে ফিরব।”
লম্বা চোট কাটিয়ে ফেরা নেইমার ধাপে ধাপে নিজের সেরা ফর্মে ফিরতে চান। গতকালের ম্যাচে খুব বেশি দৌড়ানো বা ড্রিবল করার চেষ্টা করেননি বলে জানান তিনি।
নেইমারের বাবার বক্তব্য: ক্যারিয়ারের শেষ চক্র?
নেইমারের বাবা নেইমার সিনিয়র মনে করেন, ছেলের ক্যারিয়ারের এটি শেষ অধ্যায়ের সূচনা। ম্যাচের আগে গ্যালারিতে বসে তিনি বলেন, “আমার ছেলের ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় এবং শেষ চক্র। প্রথমটি ছিল সান্তোসে উত্থান, দ্বিতীয়টি ইউরোপ ও সৌদি আরবে সাফল্যের অধ্যায়, এবং এখন সান্তোসে প্রত্যাবর্তন। আমরা চাই, সে যেন এটি পুরোপুরি উপভোগ করতে পারে।”
নেইমারের ক্লাব ক্যারিয়ার: সাফল্যের ধারা
নেইমার ২০০৯ সালে সান্তোসের হয়ে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দিয়ে ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর অংশ হন। ২০১৭ সালে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফিতে পিএসজিতে যোগ দেন। এরপর ২০২৩ সালে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলালে নাম লেখান, তবে চোটের কারণে খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। এবার আবারও ফিরেছেন নিজের শৈশবের ক্লাবে, যেখানে তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম সাফল্যের গল্প লেখা হয়েছিল।
সান্তোসের নতুন আশার আলো
নেইমারের প্রত্যাবর্তন শুধু সান্তোসের জন্য নয়, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের জন্যও বড় এক ইতিবাচক ঘটনা। তাঁর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ক্লাবকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আপাতত, সমর্থকরা তাকিয়ে আছেন নেইমারের পারফরম্যান্সের দিকে, যিনি সান্তোসে ফিরেই প্রমাণ করলেন—তিনি এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী!
Share Now