তিস্তা বাঁচাও পদযাত্রা মানুষের ঢল

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

রিজু সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও চীনের অর্থায়নে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর মহানগরীতে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত পদযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। হাজার হাজার মানুষ তিস্তাত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে পদযাত্রায় অংশ গ্রহণ করেন। তিস্তা নদীর পানি সংকট, নদীভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় রংপুর অঞ্চলবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে এই তিস্তা রক্ষা আন্দোলন। সেই দাবিকে ঘিরেই রংপুর নগরীতে অনুষ্ঠিত হয় এই ‘তিস্তা বাঁচাও পদযাত্রা’। গতকাল দুপুর থেকে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষক সংগঠন, শ্রমজীবী মানুষ, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ নাগরিকরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন। ফলে পদযাত্রাটি এক গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রংপুর শহর। পদযাত্রাটি শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে গ্র্যান্ড হোটেল মোড়, প্রেসক্লাব, জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্বর, সিটি বাজার, কাছারি বাজার হয়ে জিলা স্কুলে মাঠে গিয়ে শেষ হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ভারত পানিকে মারনাস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ পানি কখনোই মারণাস্ত্র হতে পারে না, যুদ্ধের অস্ত্রও হতে পারে না। কিন্তু একমাত্র ভারতই বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র ও মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা ভারতের কাছে কিছু চাই না, শুধু পানি চাই। আমরা বকশিশ চাই না, ভিক্ষা চাই না, আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যার পানি চাই। আজ না হোক, কাল দিতেই হবে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। পূর্ববর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে এই হিসাব-নিকাশ করেনি, কারণ তারা সরকারে থাকার ইচ্ছায় ভারতকে চাপে ফেলেনি। আমাদের কাছে ভারতের অনেক কিছু রয়েছে। মংলা পোর্ট, চট্টগ্রাম পোর্ট সবকিছুই হিসাব করতে হবে। হিসাব করার সময় এসেছে। আমাদের তিস্তার পানি চাই, ফারাক্কার পানি চাই। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা বহু আগেই পানির ন্যায্য হিস্যা পেতাম যদি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী ফ্যাসিষ্ট সরকার না আসতো। তারা ভারতের কাছে কোনো দিন পানির দাবি তুলতে পারেনি। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত পদযাত্রায় রংপুরে জনস্রোত নামে। এই পদযাত্রায় ৫ জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়। শাপলা চত্বরে দুপুর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষক সংগঠন, শ্রমজীবী মানুষ, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পদযাত্রাটিকে এক গণআন্দোলনে রূপ দেয়। শ্লোগানে শ্লোাগানে মুখর হয়ে ওঠে রংপুর। পদযাত্রায় আসা লোকজন বলেন, পানির অভাবে চাষাবাদ দিনদিন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও জীবিকা আজ হুমকির মুখে পড়েছে। অবিলম্বে তিস্তা নদী পুনঃখনন, আন্তঃদেশীয় পানি চুক্তির বাস্তবায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নদী ব্যবস্থাপনার দাবি জানাচ্ছি। প্রতি বছর আমরা বর্ষায় বন্যায় ভাসি, আর শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার করি। এটি কোনোভাবেই সহনীয় নয়। তিস্তা শুধু নদী নয়, এটি আমাদের অস্তিত্বের অংশ। পদযাত্রায় রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা থেকে আসা কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, তার উপজেলাটি তিস্তা নদী দ্বারা প্রবাহিত পানির অভাবে চাষাবাদ দিনদিন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তিস্তা শুকিয়ে গেলে আমাদের ভবিষ্যৎও শুকিয়ে যাবে। লালমনিরহাট কালীগঞ্জ থেকে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় রংপুরসহ এ অঞ্চলের কৃষি ও জীবিকা আজ হুমকির মুখে। অবিলম্বে তিস্তা নদী পুনঃখনন, আন্তঃদেশীয় পানি চুক্তির বাস্তবায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলবে হবে। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে আসা চাঁদ সরকার ও আইয়ুব আলী বলেন, প্রতি বছর আমরা বর্ষায় বন্যায় ভাসি, আর শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার করি। এটি কোনোভাবেই সহনীয় নয়। তিস্তা শুধু নদী নয়, এটি আমাদের অস্তিত্বের অংশ। এর আগে নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তাপারের মানুষজন গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দু’দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার ১১ স্থানে তাঁবু খাটিয়ে একই সময়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে সবগুলো পয়েন্টে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন। কিন্তু তারপরও বর্তমান অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার এখন পর্যন্ত বিষয়টি আমলে নেয়নি। তিস্তা অভিমুখে গণপদযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ভরসা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *