ePaper

জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি বদলী প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড়

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি

টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পুরস্কৃত হওয়া মোশারফ হোসেন হঠাৎ করেই বদলির আদেশ পেয়েছেন। তাঁর নিরলস পরিশ্রম, অপরাধ দমন ও জনবান্ধব ভূমিকার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন আস্থার প্রতিক। বদলির খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে “অযৌক্তিক” ও “প্রশাসনিক চাপের ফল” বলে মন্তব্য করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন যোগ্য ও সাহসী পুলিশ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে জনসেবার উপর আঘাত হানা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ওসি সাহেবের জনপ্রিয়তা কিছু লোকের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছিল। ফেসবুক স্টেটাস গুলো তুলে ধরা হলো, একজন সৎ, সাহসী, এবং মানুষের কাছে প্রিয় পুলিশ অফিসার যখন হঠাৎ করে বদলি হন, তখন প্রশ্ন উঠে কেন। ওসি মোশারফ ছিলেন আমাদের জেলার গর্ব। অপরাধ দমন, মাদক ও ডাকাতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিটি মুহূর্তে তিনি প্রমাণ করেছেন একজন ভালো পুলিশ অফিসার কেমন হওয়া উচিত। এখন তিনি নেই। বদলির আদেশ এসেছে। আমরা যারা তাঁর কাজ দেখেছি, আমরা জানি এটা শুধু একজন কর্মকর্তার বদলি নয়, এটা মানুষের বিশ্বাসের উপর আঘাত। প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন, সৎ কর্মকর্তাদের পাশে কি কেউ দাঁড়াবে? স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্টের পর সারাদেশে পুলিশের ভাবমুর্তি যখন ক্ষুন্ন, আইনশৃংখলা যখন অবনতি, ঠিক সেই মুহুর্তে মির্জাপুরে ওসি হিসেবে যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পর তিনি জনসাধারণের সাথে মিশে মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় সর্বদা কাজ করেছেন। মির্জাপুরে মাদক ও ডাকাত নির্মুলে কাজ করেছেন নিরলসভাবে। তারা আরও জানায়, মির্জাপুরের মতো একটি শিল্পাঞ্চলিক থানায় তার মতো ওসির বিশেষ প্রয়োজন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ইমন সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ৫ আগস্টের পর সারা বাংলাদেশের ন্যায় মির্জাপুরেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। সেই সময় মির্জাপুরের আইনশৃঙ্খলার হাল ধরেন ওসি মোশারফ হোসেন। তিনি অত্যন্ত আন্তরিক, পরিশ্রমী ও মানবিক। মির্জাপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তিনি সার্বক্ষণিক আমাদের সাথে আলোচনা করেছেন। এদিকে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে একান্তে আলোচনা কালে তারা বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত বলে জানিয়েছেন। ওসি মোশারফের বদলির বিষয়ে তাদের ভিতরে চাপা ক্ষোভও দেখা যায়। তারা বলেন, ছেলেটি অনেক পরিশ্রমী, আন্তরিক ও মানবিক। পুলিশের চাকরি কখন কোথায় বদলি হবে কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু মাত্র কয়েকদিন আগেই সে শ্রেষ্ঠ ওসি হয়েছে, আর এখনই বদলি। বিষয়টি দুঃখজনক। তাকে কাজ করার সুযোগ দেয়া উচিত ছিলো বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। মির্জাপুরের রাজনৈতিক একাধিক নেতৃবৃদ জানায়, ওসি মোশারফ সপ্তাহখানেক আগে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসির পদক পান। আমরা উচ্ছাসিত হয়ে ছিলাম। হঠাৎ বদলী হওয়ায় আমরা হতভম্ব। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এবিষয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার মো.মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের বদলী বাংলাদেশ পলিশের চলমান প্রক্রিয়া। আসলে যেকোন পুলিশ অফিসার যেকোন সময় বদলী হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *