গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে উপজেলার আলু সংরক্ষণের বুকিং কার্ড এখন ব্যবসায়ীদের দখলে, বিপাকে কৃষক। দিনরাত আলু নিয়ে হিমাগারে অপেক্ষা। তারপরও সেখানে রাখা যাচ্ছে না। বুকিং কার্ড থাকলেও আলু নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে কৃষককে। বিপাকে পড়ে কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে, হিমাগারের ব্যবসায়ীদের কাছে। হিমাগারের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় দালাল ও ফড়িয়াদের সঙ্গে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আলু সংরক্ষণের কার্ড হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কৃষকেরা হিমাগারে আলু রাখতে পারছেন না। কৃষকদের অভিযোগ, হিমাগার কতৃপক্ষ যোগসাজশে মজুতকারীদের আলু সংরক্ষণের কার্ড আগে ভাগেই দিয়েছে। ফলে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের কার্ড থেকে সাধারণ আলুচাষিরা বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ দিন-রাত ট্রলি, ট্রাক্টর, ভ্যানে করে ব্যবসায়ী ও মজুতকারীদের হাজার হাজার বস্তা আলু হিমাগারে প্রবেশ করছে। এদিকে বুকিং কার্ড না পেয়ে কৃষকেরা খেত থেকে তোলার সঙ্গে সঙ্গে আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে তারা আগামী মৌসুমের জন্য বীজ আলুও সংরক্ষণ করতে পারবেন না। চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার শুরুতে আগাম জাতের আলুর দাম কিছুটা বেশি ছিল। তবে এখন দিনে দিনে দাম কমেছে। বর্তমানে ৩৮০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। গত বছর বিদ্যুৎ বিলের অজুহাতে প্রতি বস্তা আলু রাখার ভাড়া ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করে নিয়েছিল হিমাগারগুলো। এ বছর আবারও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এবার কোল্ডস্টোরেজ প্রতি কেজি ৮ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছে। এতে ৬৫ কেজির এক বস্তা আলুর ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা। অগ্রিম বুকিং কার্ড নিতে দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা করে। হিমাগার কর্তপক্ষ বলছে, গত বছর যে এক বস্তায় ৬৫-৬৬ কেজি পর্যন্ত আলু রাখা হয়েছিল, তা এবার ৫০ কেজি করে রাখতে হবে। সেহরি খেয়ে হিমাগারে আলু রাখতে যান কৃষক সাইফুল ইসলাম (৩৬)। পরদিন রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও আলু রাখতে না পেরে ফেরত যান তিনি। সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএডিসির মাধ্যমে ১০০ টাকা কেজি দরে আলুর বীজ কিনেছিলেন। দেড় বিঘা জমিতে রোপণ করেন তিনি। এতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০ মণ আলু। হিমাগারে ১০ বস্তা রাখার জন্য স্লিপ কিনেছেন। কিন্তু স্লিপ থাকার পরও হিমাগারে রাখতে না পেরে আলু নিয়ে ফেরত যান। এতে গুনতে হয়েছে বাড়তি গাড়ি ভাড়া। ফলে কম দামে বাড়ি থেকেই আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। হরিরমাপুর ইউনিয়নে পারধন্দিয়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম (৩০) জানান, তিনিও দুই বিঘা জমিতে আলু রোপণ করে ছিলেন, কিন্তু দুদিন হিমাগারে ঘুরেও আলু রাখতে পারেননি। পরে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। এদিকে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলার বকচর হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজ-১, গোবিন্দগঞ্জ কোল্ডস্টোরেজ-২ ও উপজেলার সূর্যগাড়ি এলাকায় ১টি