ePaper

কলাপাড়ায় মসজিদ উন্নয়ন তহবিল লুটের অভিযোগ

সৌমিত্র সুমন, (পটুয়াখালী) কলাপাড়া

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় বরাদ্দকৃত মসজিদ ও মন্দির উন্নয়ন তহবিলের অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের তীর ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার দিকেও উঠেছে। জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এলজিইডির আওতায় কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পূর্ব আলিপুর গ্রামের ‘বায়তুল বিলকিস জামে মসজিদে’ উন্নয়ন কাজের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী, কাজটির ঠিকাদার ছিলেন কলাপাড়ার কবির মৃধা। মসজিদ কমিটির দাবি, উন্নয়ন কাজটি ঠিকাদারের বদলে তারা এলজিইডি অফিসের অনুমতি ও সমন্বয়ে নিজেরাই সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু বরাদ্দের সম্পূর্ণ অর্থ না দিয়ে ঠিকাদার কেবল এক লাখ টাকার মতো দিতে চাচ্ছেন, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান বলেন, “ঠিকাদার ও অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা নিজেরাই কাজ করেছি। যদিও কিছু কাজ এখনো বাকি, তবুও তিনি কেবল এক লাখ টাকা দেন এবং জানান, আর দিতে পারবেন না।” এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, “বর্তমানে দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। সরকার গঠনের আগেই এই বরাদ্দ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে পুরো বরাদ্দের অর্থ মসজিদের কাজেই খরচ হওয়া উচিত ছিল। এখন যদি ঠিকাদার অর্থ আত্মসাৎ করে, ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতির আশঙ্কা থেকেই যায়।” এমন অভিযোগ শুধু পূর্ব আলিপুর মসজিদেই নয়, কলাপাড়া উপজেলার আরও কয়েকটি মসজিদ ও মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পেও অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার কবির মৃধা বলেন, “তিন লাখ টাকার প্রকল্পে পাঁচ শতাংশ লেস ও ভ্যাট কেটে আমার হাতে এসেছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকার চেক। এরমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে নির্ধারিত খরচ রয়েছে। সব খরচ মেটানোর পর এক লক্ষ টাকার বেশি দেয়ার সুযোগ নেই।” তবে এলজিইডি পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসেন আলী মীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার অফিস বা উপজেলার কোথাও ঘুষের কোনো প্রয়োজন নেই। বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে শুধু ভ্যাট বাদ দিয়ে ঠিকাদার ব্যবসা রেখে বাকি পুরো অর্থ মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে হবে। অন্য কোনো খরচ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই।” ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চরম চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *