সবুজ দাস, ফরিদপুর : গ্রীষ্মের প্রখর তাপে যখন জীবনপাথ হচ্ছে, তখনই প্রকৃতিতে চলছে অদ্ভুত এক সৌন্দর্যের প্রপাত। ফরিদপুর শহরের পথে পথে, উদ্যানে উদ্যানে ভেসে চলেছে জলপ্রপাতের মত পুষ্পস্রোত। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ ডিগ্রি শাখা এবং অনার্স শাখায় গেলে দেখা যায় রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া, এছাড়া শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সামনে, আঙ্গিনা ব্রিজের ঢালুতে, সিভিল সার্জন অফিসের সামনের সড়ক সহ শহরের অলিতে গলিতে এবং প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে দেখা যায় রক্তরাঙা গ্রীস্মের এ কৃষ্ণচূড়া ফুল যেন শহরে নিয়ে এসেছে কিছুটা প্রশান্তির বার্তা। শহরে চলতে গেলে চোখে পড়তেই চোখ মেলে একটু তাকিয়ে দেখা যেতে পারে এসব ফুলকে, গরমে তাতে যেন মনের প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়। যাত্রীরা রিকশা থামায় বলে, ভাই, একখান ছবি তুলে মনের প্রশান্তি ফিরে পাই। শহর যদি সব সময় এমনই থাকত, কতই না ভালো হতো। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সাবিহা নূর বলেন, ‘চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়া যেমন কঠিন, তেমনি ক্লান্তিকর। কৃষ্ণচূড়ার নিচে কয়েক মিনিট বসলে মাথা ঠান্ডা হয়ে যায়। গাছটা আমাদের এক ধরনের থেরাপি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ মাস্টার্স বাংলা বিভাগের রাজেন্দ্র কলেজ শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমাদের কলেজের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেঙে যাওয়াতে কলেজে আরো বেশ কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছি। কারণ গাছ শুধু অক্সিজেনই দেয় না আমাদের কলেজের সৌন্দর্যকে অনেক বৃদ্ধি করে রেখেছে এই কৃষ্ণচূড়া। ফরিদপুরকে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য রাখতে এই গাছগুলো অমূল্য।’ মাস্টার্স মার্কেটিং বিভাগের রাজেন্দ্র কলেজ শিক্ষার্থী আবরাব নাতিম ইতু বলেন, যে কোনো লালই যেকোনো মানুষকে আকৃষ্ট করে। আর কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল আমাদের কাছে আরো বেশি আকৃষ্ট করে তুলে। গ্রীস্মের গরমে কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়ায় এসে যেন অন্যরকম প্রশান্তি ফিরে পাই। গরমে যখন শরীর ও মন খুব খারাপ লাগে তখন কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে এসে বন্ধুদের সাথে সময় কাটাই, আবার যখন একাকী ফিল করি তখন কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে এসে যেন স্বস্থি ফিরে পাই, আবার কখনো এই গাছের নিচে এসে বই পড়তে খুব ভালো লাগে। ‘কৃষ্ণচূড়ার গাছগুলো এখন শুধু শোভা নয়, এটি শহরের সৌন্দর্য রক্ষার প্রতীক। এইচ এস সি বিজ্ঞান বিভাগের রাজেন্দ্র কলেজ শিক্ষার্থী তনয়য়া লাইসা বলেন, আমার কাছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য অন্যরকম। দূর থেকে যতটা আকর্ষণ তার থেকে কাছে আসলে বেশি আকর্ষণ। আমাদের কলেজের সব থেকে আকর্ষণ এই কৃষ্ণচূড়া। জাপান, ডেনমার্ক ওদের আছে সাকুরা আমাদের আছে কৃষ্ণচূড়া। যখনই মন খারাপ লাগে তখনই ছুটে আসি কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়ায়। মনের প্রশান্তি ফিরে পেতেই বইয়ের দিকে চোখ বোলাতে থাকি। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এস. এম. আবদুল হালিম বলেন, ‘ফরিদপুর শহরের হৃদয়ে কৃষ্ণচূড়া আজ জীবন্ত কাব্য। আমাদের কলেজ চত্বরে যে শতবর্ষী কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে, তা শুধু ছায়া দেয় না, ইতিহাসও বয়ে নিয়ে চলে। ছাত্রছাত্রীরা এর নিচে বসে গান বাঁধে, কবিতা লেখে, সৃজনশীল চর্চা করে। আমরা চাই, ফরিদপুর জুড়ে এমন আরও সবুজ উদ্যোগ হোক।’
Related News
ফরিদপুরে জমি দখলমুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন
- Sahin Alom
- June 22, 2025
- 0
সবুজ দাস, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের চিতার বাজারে কয়েক ব্যক্তির জমি বিগত সরকারের সময় দাপট দেখিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ […]
ফরিদপুরে চৌধুরী শায়লা কামালের মৃত্যুতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
- Sahin Alom
- March 25, 2025
- 0
লিয়াকত হোসেন, ফরিদপুর ব্যুরো ফরিদপুরের গন মানুষের নেতা সাবেক মন্ত্রী মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ-এর সহধর্মিনী ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ […]
মধুখালীতে পৈত্রিক জমিতে ঘর তুলতে বাধা
- Sahin Alom
- April 9, 2025
- 0
মধুখালী প্রতিনিধি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের মছলন্দপুর গ্রামের সলেমান শেখ ও সাজেদুল ইসলাম দুলু তাদের পৈত্রিক জমিতে ঘর তুলতে বাধা দেয় প্রতিবেশী রেন্টু মোল্যা। […]