মেছবাহ উদ্দিন, (নোয়াখালী) কোম্পানীগঞ্জ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং মেট্রো হোমসের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে গত ১৬ বছর রাস্তাঘাটে ডাকাতি, লুটপাট, চাকরি বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্যসহ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে লুটে খেয়েছে শেখ পরিবার আর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ কবিরহাট-৫ আসনে লুট করে খেয়েছে ওবায়দুল কাদের ও তার ভাই মির্জা কাদের পরিবার। তার মানে বাংলাদেশকে খেয়েছে শেখ পরিবার, এই এলাকাকে খেয়েছে ওবায়দুল কাদের পরিবার। আমাকে সমর্থন দিন, কোম্পানীগঞ্জকে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ। আমি ওয়াদা করতে পারি আমার আশ পাশে কোন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ জায়গা পাবেনা। কোম্পানীগঞ্জ আমার প্রিয় অঞ্চল, যে অঞ্চলে আমার জন্ম ও বুদ্ধি তৈরি হয়েছে। আমি পরিচ্ছন্ন কর্মী ও নেতা দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত কোম্পানীগঞ্জ গড়বো। শনিবার ইফতার পূর্বে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের সিডিউল কাস্ট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চরপার্বতী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও দলের মরহুম নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, সর্বত্র কোম্পানীগঞ্জকে সন্ত্রাসী জনপদ তৈরি করেছিল। ওবায়দুল কাদের ও মির্জা কাদের নির্দেশে বসুরহাটে ৮টি ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। এর জন্য ওবায়দুল কাদের ও মির্জা কাদেরসহ তার পরিবারের বিচার আগে করতে হবে। আমরা তাদের বিচার আগে চাই। তাদের বিচার পূর্বে রাজনীতিতে ফিরে আসার সুযোগ নেই। গত ৫ আগস্টের ছাত্র জনতার জীবনদানের মাধ্যমে হাজার হাজার ছাত্র পঙ্গুত্বের মাধ্যমে আমরা যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতা অর্জনের পরে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি এবং যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছে এখনো চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে কাঁতরাচ্ছেন তাদের প্রতিও সমবেদনা জানাই। তাদের সুস্থতা কামনা করি। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাবো সর্বোচ্চ অগ্রধিকারে ভিত্তিতে তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার। আর যারা জীবন দিয়েছে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাবো। আমরা আশা করছি বাংলাদেশ এই বছর নির্বাচনের বছর কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনকে বিপর্যস্ত করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র চলছে, নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনে আরেকটি ৫ আগস্ট ঘটবে তবুও আমাদের নির্বাচনকে পণ্ড করতে দেবো না। দ্রুত সময়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে নির্বাচন যতোদেরী হবে ততো ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। বাংলাদেশে এক লুটেদের বিদায়ের পরে নতুন লুটেদের জন্ম হোক আমরা চাই না, নতুন সন্ত্রাসী তৈরি হোক আমরা তা চাই না, লুটেদের চিরতরে বিদায় করতে চাই, দখল মুক্ত করতে চাই, জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনে ভালো মানুষকে সমর্থন দিবেন যারা লুটপাট করবে না, চাঁদাবাজি করবে না, দল বিক্রি করবে না, দলকে নতুন করে বিতর্কিত করবে না। শান্তির সমাজ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে কোম্পানীগঞ্জকে শান্তির জনপদ সৃষ্টি করা যাবে। রাতে ও দিনে নির্বিঘ্নে রাস্তায় হাঁটতে পারবেন চলতে পারবেন তাতে কোন আশঙ্কা থাকবে না। আমাদের দলের নামে (বিএনপি) চাঁদাবাজি করলে, টেন্ডারবাজি করলে, দখল বাণিজ্য করলে তাদেরকে কোন ভাবে প্রশ্রয় দেবো না প্রয়োজনে আমরা সবাই মিলে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করবো। তিনি আরো বলেন, কোম্পানিগঞ্জে বিএনপির আহবায়ক কমিটি আছে সাড়ে তিন বছরেও তারা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি, আমি অথর্ব কমিটিকে মানে- সম্মানে কমিটি থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করবো। তা না হলে জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়বেন। তিনি আরো বলেন, আমি জেলা এবং কেন্দ্রকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করবো যারা ৫ আগস্ট এর পূর্বে দলের ত্যাগ স্বীকার করছে মামলা, হামলা, জেল, খেটেছে, আহত হয়েছে, রক্ত দিয়েছে, তাদেরকে দিয়ে কমটি করতে হবে। তাহলে মানুষ বুঝবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক। কোনটা সন্ত্রাসী দল কোনটা ভালো মানুষের দল। আজকে সমাজ দুটি ভাবে বিভক্ত একদিকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অন্যদিকে নির্যাতিত ও অত্যাচারিত মানুষ, একদিকে জালেম একদিকে মজলুম, আমরা মজলুমের পক্ষে, আমরা নির্যাতিতদের পক্ষে। আমরা সকল শক্তি ত্যাগ করে চাইবো তৃণমূল থেকে সঠিক নেতৃত্ব তৈরি করা। তার মাধ্যমে কোম্পানীগঞ্জকে সঠিক নেতৃত্ব উপহার দিয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে চাই। আমি কোম্পানীগঞ্জে বাসির কাছে আবেদন করতে চাই আমাকে সমর্থন দেন আমার নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে এখানে কোন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী মাস্তানি হবে না। কোন খারাপ লোক প্রশ্রয় পাবেন না, কোন চোর- ডাকাত প্রশ্রয় পাবে না, চাকরি বাণিজ্য হবে না, বিনা টাকায় চাকরি হবে, স্কুল -মাদ্রাসার ভবন হবে টেন্ডার বাণিজ্য ছাড়া। যত টাকার কাজ হোক শতভাগ কাজ হবে, কোন কমিশনে কাজ হবেনা, আমাকে কোন কমিশন দিয়ে কাজ করতে হবে না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোম্পানীগঞ্জে ৫৭টি নির্বাচনী কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে কেন্দ্র থেকে আমার লোকদের পিটিয়ে বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে। তার পরও এই কদমতলা কেন্দ্রে তারা একতরফা সিল মারার পরেও সে নির্বাচনে আমি বিজয়ী হয়েছি। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন এখনও আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ভিপি শাহানাজ পারভীন বলেন, দলের দুঃসময়ে শুধু কোম্পানীগঞ্জ কবিরহাট নয়, নোয়াখালী জেলা ও চট্রগ্রাম বিভাগে সকল দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে, মামলা হামলার শিকার নেতাকর্মীদের সাহস শক্তি যোগাতে সব ধরনের সহায়তা করেছিলেন আমাদের নেতা ফখরুল ইসলাম। ৫ আগষ্টের পর জনসম্পৃক্ততাহীন নতুন নতুন নেতাদের আবির্ভাব দেখা যাচ্ছে। অতিতে দলের দুঃসময়ে এদের দেখা যায়নি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একরামুল হক মিলনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা মহিলা দলের উপদেষ্টা জোসনা আরা বেগম, সভানেত্রী ভিপি শাহানাজ পারভীন, লেখক ও কলামিষ্ট লন্ডন প্রবাসী শাহ আলম, চর পার্বতী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক কাউসার আলম বাইতুল, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হারুনুর রশীদ ভুঁইয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান টিপু, গোলাম হায়দার শাহীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মহিন উদ্দিন ছোটন, বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নুর উদ্দিন ফাহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাছের মেম্বার, জসিম মেম্বার, বিএনপি নেতা রহমত উল্যাহ রাজু, চর পার্বতী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মাইন উদ্দিন, চরফকিরা ইউনিয়ন যুবদল নেতা শিহাব উদ্দিন রিপন, মহিলা নেত্রী কামরুন নাহার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজ আজমীরসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।