ePaper

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত বিদ্রোহীদের পরিচয় এবং তাদের অগ্রগতি

সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের কার্যক্রম এবং তাদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাত করা বিদ্রোহীরা: ইদলিব থেকে আলেপ্পো পর্যন্ত তাদের অভিযান এবং ইতিহাস।

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক আক্রমণ বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছে। তারা দেশটির রাজধানী দামেস্ক দখল করেছে এবং দাবি করেছে যে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এই ঘটনায় সিরিয়ার রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমরা সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরব।

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত: কারা এই বিদ্রোহীরা?

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় এবং প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হলো হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে এটি পরিচিত ছিল জাবাত আল-নুসরা নামে, যা সরাসরি আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০১৬ সালে এর বর্তমান নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জাওলানি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং নতুনভাবে হায়াত তাহরির আল-শাম গঠনের ঘোষণা দেন।

এটি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশকে তাদের শক্তির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসন চালানোর পাশাপাশি বিদ্রোহী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। যদিও তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তবে সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাতের কারণ

২০১১ সালে সিরিয়ায় গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ শুরু হয়। দাররা শহরে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ আসাদ সরকারের কঠোর দমন-পীড়নের কারণে বিদ্রোহে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে এই বিক্ষোভ সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপান্তরিত হয় এবং দেশটি পুরোপুরি গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে।

বিরোধী গোষ্ঠীগুলোতে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শক্তি যুক্ত হয়। একদিকে রাশিয়া এবং ইরানের সহায়তায় আসাদ সরকার টিকে থাকার চেষ্টা করে, অন্যদিকে বিদ্রোহীদের সহায়তা দেয় তুরস্কসহ বিভিন্ন বিদেশি শক্তি।

আসাদ সরকার উৎখাতে বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক আক্রমণ

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) আলেপ্পো শহরে একটি বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করে। নভেম্বরের শেষ দিকে শহরটি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। তাদের সফলতা সরকারপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে।

বেশ কয়েকজন সামরিক বাহিনীর সদস্য বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেয়, যা সরকারপক্ষের পতনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। আলেপ্পো শহরের দখলের পর বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হয় এবং সেখানে প্রেসিডেন্ট আসাদের পতন ঘটায়।

This image has an empty alt attribute; its file name is %E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A7%8E%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%A4%E0%A6%BF.jpg
সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাত করা বিদ্রোহীরা: ইদলিব থেকে আলেপ্পো পর্যন্ত তাদের অভিযান এবং ইতিহাস।

হায়াত তাহরির আল-শামের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত ঘটানোর ক্ষেত্রে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারা শুধু ইসলামি শাসন কায়েমের লক্ষ্যে কাজ করছে না, বরং সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা আনতে চায়। তবে তাদের অতীত কার্যকলাপ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে।

সিরিয়ায় যুদ্ধের প্রভাব

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং ১ কোটিরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫০ লাখ মানুষ শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আসাদ সরকারের পতন নতুন করে সিরিয়ার জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে, তবে সামনের দিনগুলোতে দেশটির স্থিতিশীলতা কতটা ফিরে আসবে, তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে।

উপসংহার

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত এক বড় রাজনৈতিক এবং সামরিক পরিবর্তন। বিদ্রোহীদের কার্যক্রম, বিশেষ করে হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS)-এর ভূমিকা, এ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নির্ভর করবে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির ভূমিকার ওপর।

সিরিয়ায় আসাদ সরকার উৎখাত নিয়ে এই বিস্তারিত প্রতিবেদন গুগলে র‌্যাংকিংয়ে সহায়তা করবে। সঠিক কিওয়ার্ড স্ট্র্যাটেজি এবং বিস্তারিত তথ্যের মাধ্যমে পাঠকদের জন্য এই প্রতিবেদন আরও কার্যকর হয়ে উঠবে।

আন্তর্জাতিক-সংবাদ: আরও খবর

Read our ePaper : https://epaper.dailynabochatona.com/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *