ePaper

কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাসারিতা, অনিয়ম ও দূর্নীতিতে ধ্বংসের পথে ডেল্টা জুট মিলস

ইয়াকুব নবী ইমন, নোয়াখালী প্রতিনিধি:

কর্তৃপক্ষে স্বেচ্ছাসারিতা, অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে ধ্বংসের পথে নোয়াখালীর ডেল্টা জুট মিলসটি। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। মিলসটিতে বিরাজ করছে শ্রমিক অসন্তোষ। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। শ্রমিকরা সরকারের শ্রম উপদেষ্টাসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে মিলস কর্তৃপ

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আদমজী জুট মিলস এর পর দেশের বৃহত্তম পাট কল নোয়াখালীর ডেল্টা জুট মিলস। এক সময় এখানে হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কাজ করতো। এখানকার উৎপাদিত পন্য দেশে-বিদেশে ছিলো সমাদ্রিত। কিন্ত কালক্রমে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বর্তমান মিলস কর্তৃপক্ষের চমর উদাসিনতা, অব্যবস্থাপনা, স্বেচ্ছাসারিতা, অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে ধ্বংসের ধারপান্তে মিলসটি। মিলসটি ঠিকমতো না চালিয়ে বিভিন্ন সময় দামি মেশিনারিজ বাইরে বিক্রি করা ও গোডাউনগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মিলস কর্তৃপক্ষে বিরুদ্ধে। এদিকে শ্রমিকদের ২২ মাসের বেতন ও কর্মচ্যুত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোটি টাকার উর্ধে বাকি পড়েছে। বেতন না পেয়ে অর্ধহারে অনাহারে মানবেতর জীবণ যাপন করছে তারা। কাজে না গেলে ও বেতন চাইলে মিলস কর্তৃপক্ষের লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করতে শ্রম উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন ফল পাচ্ছেনা তারা।

একাধিক শ্রমিক জানান, আমাদের বেতন বন্ধ না পারছি এখান থেকে যেতে, না পারছি কাজ করতে। ঠিক মতো মাল সরবরাহ হয়না। এক সপ্তাহ কাজ করলে পরের সপ্তাহ বসে থাকতে হয়। কাজ না করলে আমাদের হাজিরা বন্ধ, বেতন বন্ধ। ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। আমাদের দেখার কেউ নেই।

কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা মতে বেতন ভাতা না পেলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন হুশিয়ারি দেন শ্রমিক নেতারা।

তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ডেল্টা জুট মিলস এর জেনারেল ম্যানেজার মো: আবদুল ওয়াদুদ। মিলের গোডাউন বাইরের ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এখানে আইনগত কোন সমস্যা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আরিফুর রহমান জানান, শ্রমিকরা আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর তাদের দেনা-পাওনা বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে শুনেছি। তাই তারা আন্দোলন স্থগিত করেছে। এর বাইরে মিলসটির বিষয়ে আমার আর কিছু জানা নেই।

দ্রুত শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করার মাধ্যমে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরবে ঐতিহ্যবাহী এই জুট মিলসে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *