ePaper

সিরাজগঞ্জে শুকিয়ে গেছে করতোয়া-ফুলঝোড় নদী বন্ধ শত বছরের খেয়া পারাপার

রফিকুল ইসলাম,সিরাজগঞ্জঃ

স্বাভাবিক গভীরতা ও স্রোত কমে যাওয়ায় করতোয়া-ফুলঝোড় নদীর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কালিগঞ্জঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। শত বছরের এই এই ঘাটে স্থাপন করা হয়েছে বাঁশের সাকো। নদীা দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ এই সাঁকো দিয়ে এখন পারাপার হচ্ছেন। উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ ড়ুামের পাশ দিয়ে ফুলঝোড় নদী বয়ে গেছে। মূলতঃ করতোয়া নদী এখানে এসে ফুলজোড় নাম ধারণ করে দক্ষিণ দিকে আরো ৫০ কিলোমিটার দূরে বড়াল নদীতে মিলিত হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক নদী। এ নদীকে কেন্দ্র করে উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর, পঞ্চক্রোশী, সলপ ইউনিয়ন ও উল্লাপাড়া শহরের মানুষের নদী কেন্দ্রীয় জীবন গড়ে উঠেছে। এক সময় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চলনবিল হয়ে শাহজাদপুর যেতে এই নদী ব্যবহার করতেন। কালিগঞ্জ এলাকায় সারা বছরই ফুলঝোড় নদীতে পানি থাকতো। এস্থানে নদীর অনেক গভীরতা ছিল। এই নদীপথে যাতায়াত করতো বড় বড় নানা রঙের পাল তোলা নৌকা। এই নদীতে মাঝি উদাস সুরে গাইতো ভাটিয়ালী গান। প্রতিবছর আয়োজন হতো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। কিন্তু ধীরে ধীরে নদী ভরাট হয়ে বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার অতি পরিচিত কালিগঞ্জ খেয়াঘাটটি জেলা পরিষদ থেকে প্রতি বছর সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। সারা বছরই নৌকায় পারাপার হতো দুই পাড়ের মানুষ। কালিগঞ্জ খেয়াঘাটের দুই পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের পাকা সড়ক আছে। এই খেয়াঘাট পার হয়ে নদীর পূর্ব পাড়ের উল্লাপাড়া উপজেলার কালিগঞ্জ, বন্যাকান্দি, দমদমা, মনিরপুর, বেতকান্দি, কর্ণসুতী, শাহবাজপুর গ্রামসহ সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি ও কামারখন্দ উপজেলার জনসাধারণ যাতায়াত করে। গত ১ মার্চ  থেকে নির্মিত সাঁকো দিয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল অটোরিকশা, ভ্যান নিয়ে লোকজন পারাপার হচ্ছে। কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটের ইজারা নেওয়া প্রায় ৬৫ বছর বয়সী মো. রতন প্রামাণিক বলেন, কালিগঞ্জ খেয়াঘাটটি প্রতি বছরই ইজারা ডাক হয়। তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর হলো ইজারায় ডাকা ঘাটটি চালাচ্ছেন। খেয়া ঘাটের আশে পাশের গ্রামগুলোর বসবাসকারী পরিবারগুলোর কাছ থেকে পারাপার বাবদ ফসল তোলা হতো। আবার অনেকেই এককালীন নগদ টাকা দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার লোকজন নগদ টাকায় পারাপার হন। তিনি আরো বলেন, খেয়া ঘাট এলাকায় নদীতে এখন পানি নেই বললেই চলে। এখানে সাঁকোয় লোকজন টাকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *