বাংলাদেশে নবনিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লী জাং কেইন ০৫ নভেম্বর সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চেম্বার কার্যালয়ে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় চেম্বার পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, কোরিয়ার অনারারী কনসাল (গাজীপুর) ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন, দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারী জূ জি জং ও কোরিয়া ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সী (কোটরা)’র প্রধান কিম জাং-ওন বক্তব্য রাখেন।রাষ্ট্রদূত লী জাং কেইন বলেন-কোরিয়া বাংলাদেশে ৬ষ্ঠ বৃহৎ বিনিয়োগকারী এবং তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার। প্রায় ২০০ কোরিয়ান কোম্পানী এদেশে বিনিয়োগ করেছে। কোরিয়ান ইপিজেড দু’দেশের বন্ধুত্বের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তৈরীপোশাকের পাশাপাশি বর্তমানে অবকাঠামো উন্নয়ন, ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল খাতে কোরিয়া বিনিয়োগ করছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ও হসপিটাল নির্মাণে যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনা করা হ”েছ। কোরিয়া আরও মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তাঁর সময়কালে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি লভ্যাংশ কমে যাওয়া, শ্রম আইনের পরিবর্তন এবং অবসর গ্রহণকারী কর্মীদের সুবিধাসহ বিদ্যমান কিছু সমস্যা সরকারের সাথে আলাপ আলোচনার প্রেক্ষিতে দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে এদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রদান এবং উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কোরিয়ার অবদান উল্লেখ করে বলেন-২০২১ ও ২০৪১ সালের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ইপিজেড, কেইপিজেডসহ বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ কর্মসংন সৃষ্টিসহ এদেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছে। তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে কোরিয়ান ভাষা প্রশিক্ষণের ব্যব করতে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন এবং চেম্বারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা জানান। চেম্বার সভাপতি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সম্বলিত মিরসরাই ইকনোমিক জোনে কোরিয়ান বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে আরও বেশী বাংলাদেশী পণ্য যাতে কোরিয়ার বাজারে প্রবেশ করতে পারে সে ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রামে উভয় দেশের বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট বাস্তবায়নের আহবান জানান। চেম্বার পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর কোরিয়ান মার্কেটের উপযোগী কোয়ালিটি পণ্য উৎপাদনে দেশীয় উৎপাদনকারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগে একটি ম্যানুয়েল তৈরীর প্রস্তাব করেন এবং সে দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক তৈরী ও রপ্তানি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানান। কোরিয়ার অনারারী কনসাল মোহাম্মদ মহসিন বলেন-চিটাগাং চেম্বারের সহায়তায় সরকার এবং কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান বিনিয়োগ আরও অধিক পরিমাণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে ও উভয় পক্ষ উপকৃত হবে। তিনি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কোটরার সহযোগিতায় নিয়মিত ট্রেডশো আয়োজনের অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূতকে চেম্বারের ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে অবহিত করেন সিইও ওয়াসফি তামীম। মতবিনিময়ের পূর্বে রাষ্ট্রদূত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পারমানেন্ট এক্সিবিশন হল পরিদর্শন করেন।