রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীগুলোর একটি যমুনা নদী। জামালপুর জেলার বহ্মপুত্র নদ থেকে শুরু হয়ে সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ হয়ে গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের গোয়ালন্দে পদ্মার গিয়ে মিলিত হয়েছে। এককালে যমুনা নদীর পানি দুকূল ছাপিয়ে উত্তরাঞ্চলে দেখা দিত ভয়াবহ বন্যা। যমুনা সেতুর নির্মাণে নদী শাসনের কারণে তার স্বাভাবিক গতিপথকে সেতুর পিলারের মাধ্যমে বাধা সৃষ্টি করায় উজানে অতিরিক্ত ভাঙন দেখা দেয়। যার ফলে গভীরতা কমে চর পরার প্রবণতা বেড়ে যায়। আর এখন সামান্য জোয়ারের পানিতে কূল ছাপিয়ে বন্যা হয়ে থাকে। সেতুর উত্তর পূর্বাংশ টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুরের অর্জুনা, গাবসারা, ফলদা, গোবিন্দাসী, নিকরাইল ইউনিয়নের পশ্চিম সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এই নদী সিরাজগঞ্জের যমুনা। চৌহালীর সব ইউনিয়নের সম্পূর্ণ গ্রামগুলো যমুনা নদীর বুকে জেগে উঠা চরাঞ্চল। এককালে অথৈ পানিতে থৈ থৈ করা নদী আজ পৌষ মাস থেকেই পানি শুকিয়ে মাইলের পর মাইল ধূ-ধূ বালুচর। যমুনা সেতু তৈরির পূর্বে ভূঞাপুর থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদী। ফেরি, যন্ত্র চালিত নৌকার মাধ্যমে নদী পাড় হয়ে উত্তরবঙ্গে যাওয়াই ছিল একমাত্র অবলম্বন। ব্যবসা বাণিজ্য খ্যাত গোবিন্দাসী বাজার তৈরি হয়েছিল যমুনা নদীর কোল ঘেষে। অতিদ্রুত নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় দেখা দেয় মাছের আকাল। এই নদীর ইলিশ, চিংড়ি, বোয়াল, পাবদা আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। নদীর মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করত তারা আজ অন্য পেশায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছে। শুশুয়া, চরবিহারী, রামাইল, চরচুন্দুনী, বাসুদেবকোল, গাবসারা, গ্রামগুলোর লোকজন যেখানে নৌকায় চড়ে বাড়ির ঘাটে উঠা-নামা করত সেখানে এখন মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়। এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহিদুল ইসলাম জানান, সঠিক সময়ে কৃষিপ্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনার হারানো গৌরব ফেরাতে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষ। এদিকে নাব্যতা সংকটের ফলে বাড়তি জমির ফসল যেন নির্বিঘ্নে কেটে কৃষক ঘরে নিতে পারে সেদিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ সাব্বির আহমেদ সিফাত।