ePaper

খুলনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা প্রকল্পের কর্মচারীদের মানববন্ধন

0-0x0-0-0#

শেখ জিকু আলম, খুলনা

আমরা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পে মডেল কেয়ারটেকারগণ উচ্চতর শিক্ষাগত, যোগ্যতা, সুপ্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়েও কেহ কেহ প্রায় দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলার মডেল মসজিদে/মউশিকে ভাড়াকৃত মডেল রিসোর্স সেন্টারে সম্মানীর ভিত্তিতে কর্মরত রয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে উক্ত প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী উপজেলা মডেল মসজিদে (চার) ঘনী আমিত পালানের কথা থাকলেও অফিসের প্রয়োজনে আমরা প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ফিল্ড সুপারভাইজারদের সহযোগী হিসেবে অফিসে কাজ করে আসছি। এছাড়াও প্রতিমাসে ১২ দিন কেন্দ্র পরিদর্শনের পাশাপাশি মডেল কেয়ারটেকারগণ উপজেলা পর্যায়ের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগসহ নিজ দপ্তরের নির্দেশ মোতাবেক দায়িত্ব পালন করে থাকি। মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের উপজেলা মনিটরিং কমিটির সভা, সমন্বয় সভা, শিক্ষক সম্মানী প্রদান, কেন্দ্রের তালিকা তৈরি, জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ন দিবসগুলো পালনসহ প্রায় সকল কাজে সর্বদাই দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘ বছর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পরিশ্রমের তুলনায় আমাদের অনেক কম পারিশ্রমিক প্রদান করা হচ্ছে। যেটি নিয়ম বহির্ভূত এবং নিতান্তই অপ্রতুল। যার প্রায় সিংহভাগ অর্থই প্রতিদিন অফিসে যাওয়া আসার ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়ে থাকে। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশেন তথা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একমাত্র অফিস হিসেবে মডেল রিসোর্স সেন্টার থেকে একদিকে সরকারের সকল প্রকার উন্নয়ন মূলক তথ্যের প্রচার, অন্যদিকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি নির্দেশনাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের আলেম ওলামাগণের নিকট পৌছে দিয়ে মডেল কেয়ারটেকারগণ মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও উপজেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং, যাকাত উত্তোলন, চাঁদ দেখা, উপজেলার বিভিন্ন জরিপ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মানবপাচার ও যৌতুক, বাল্য বিবাহ, মাদক ও ধর্মীয় উগ্রত্য প্রতিরোধে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মডেল কেয়ারটেকার গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু আমরা দীর্ঘ বছর অবহেলিত, নির্যাতিত, মজলুম কর্মজীবী হয়ে জীবন যাপন করে যাচ্ছি। কারণ আমরা আলেম সমাজ ভদ্র, মার্জিত ও নিরুপাই বিধায় সকল প্রকার দুঃখ কষ্ট নিরবে সহ্য করে চলেছি। গতকাল রোববার সকালে খুলনা নগরীর বয়রাস্থ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের কর্মরত কেয়ারটেকারদের পরবর্তী প্রকল্পে আশু জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪তম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণসহ ৫ দফা দাবি পূরণের লক্ষে খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়  প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধনে অবহেলিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসমস্ত দাবি পূরণের পরিপ্রেক্ষিতে এসমস্ত কথা বলেন। বক্তারা মানববন্ধনে আরও বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সুযোগের সমতার বিধান থাকলেও আমরা সে অধিকার হতে বিনা কারণে বঞ্চিত রয়েছি। ২০১৫ সালে বৈষম্যমূলক প্রকল্প প্রদানের পর থেকেই অদ্যাবদি উক্ত সংগঠনের পক্ষ থেকে বৈষম্য নিরসনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু বিগত সরকার আমাদের দাবিগুলো পূরন করবার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। সে কারণে বাধ্য হয়ে আমরা আজ চলমান অবস্থা নিরেসনে। সারাদেশে মডেল কেয়ারটেকারগণদের প্রতিবাদের অংশীদার হিসেবে মুখর হয়ে ৫ দফা দাবী প্রণয়ন করছি। ৫ দফা দাবিগুলো যথাক্রমে, সরকারী নতুন বেতন স্কেল অনুযায়ী ১৪তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ ও নিয়মিত জনবলে অন্তভুক্তি করণ। ২নং পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকারদের পরবর্তী প্রকল্পে নিয়োগ বহাল রাখা এবং পদের নাম পরিবর্তন করা। ৩নং বর্তমান মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে টি.এ/ডি.এ ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদান। ৪নং কেন্দ্র/মাঠ পরিদর্শের জন্য মটর সাইকেল ও তার জ্বালানি বরাদ্দ প্রদান। ৫নং চাকুরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা বিধানসহ একটি সুনিদিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের মহানুভবতা, অধঃস্তন কর্মচারিদের প্রতি মমতা, দায়িত্ববোধ থেকেই আমাদের প্রাণের দাবিগুলোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়ে আমাদেরকে ধন্য করবেন বলে আশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *