ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে দুই ভাই-বোনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ভগ্নিপতির উপর প্রতিশোধ নিতে ভাগ্নে-ভাগ্নিকে জবাই করে হত্যা করে আপন মামা বাদল মিয়া। বুধবার ২৬ আগস্ট মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘাতক বাদল মিয়া গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারের পর নিহতদের মামা বাদল মিয়া পুলিশকে জানায়, বাদল মিয়া বাইরাইন প্রবাসী ছিলেন। গত মার্চ মাসে বাদল মিয়া বাহরাইন থেকে দেশে আসার পর করোনা মহামারীর কারণে আর বিদেশ যেতে পারেনি। গোষ্ঠীগত দাঙ্গায় মামলার আসামী হওয়ায় কুমিল্লা থেকে বাঞ্ছারামপুরে ভগ্নিপতির বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। সে বাহরাইন থাকাকালে দোকান করার জন্য তার ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেয়। এরমধ্যে ৩ লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকি ১০ লাখ টাকা ফেরত না দেয়ায় কামাল উদ্দিনের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার। এজন্য সপ্তাহখানেক আগে বাদল মিয়াকে থাপ্পড়ও মারেন কামাল উদ্দিন। সেই রাগে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে বাদল। বাদল মিয়া কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার খোদে দাউদপুরের মৃত আব্দুর রবের ছেলে। গত সোমবার উপজেলার সলিমাবাদের সাহেবনগর গ্রামে নিজ বাড়ির পৃথক দুইটি কক্ষের খাটের নিচ থেকে কামরুল ইসলাম (১০) ও শিফা আক্তার (১৪) নামের দুই ভাই-বোনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত কামরুল ইসলাম ও শিফা আক্তার ওই এলাকার প্রবাসী কামাল উদ্দিনের সন্তান। এই ঘটনায় নিহতদের পিতা কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় বাদল মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদকে। সোমবার ২৪ আগস্ট দুপুরের খাবারের পর কামরুল ইসলাম (১০) তার মায়ের নিকট হতে মজা খাওয়ার কথা বলে ৫০ টাকা নিয়ে মামা বাদল মিয়ার রুমে যায়। তখন বাদল মিয়া তার ভাগ্নে কামরুলের হাত-পা বেঁধে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে লাশ খাটের নিচে রেখে দেয়। ভাগ্নি শিফা ঝাড়ু দিতে গিয়ে তা দেখে ফেললে তাকেও হত্যা করতে জোড়াজুড়ি করে বাদল। পরে এক ধাক্কা মেরে ওয়াশরুমে নিয়ে তাকেও গলাকেটে হত্যা করে লাশ খাটের নিচে রেখে দেয়। শিফা ও কামরুলকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে বাদলও তাদের খোঁজ করতে গিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে নিহতদের মামা সন্দেহভাজন বাদল মিয়া পলাতক ছিলেন। রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার দিনব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।