পারিবারিক কলহের জেরে’ স্ত্রীকে খুন করে তার স্বামী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা মন্ডলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা মন্ডলপাড়ার সুনাম উদ্দিনের ছেলে দুলাল উদ্দিন (৪০) এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়শা বেগম (২৫)। নিহত দুলালকে ‘উগ্র মেজাজের’ উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, গত বুধবার রাতের কোনো সময় দুলাল তার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়শাকে হত্যার পর নিজে ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওসি মনোয়ার জানান, দুলাল তার প্রথম স্ত্রী রেহেনা বেগম এবং তাদের দুই সন্তান দুলন আক্তার শিফা ও রায়হান উদ্দিন রেখে দিনাজপুরের আয়শা বেগমকে বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় ঘরেও দুই মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী রেহেনাও পারিবারিক কলহের জেরে দুই ছেলে-মেয়ে রেখে প্রায় সাত বছর আগে আত্মহত্যা করেন। এরপর তাদের ছেলে রায়হান ও মেয়ে শিফা দাদির সঙ্গে উপজেলার চন্দ্রা মন্ডলপাড়ার বাড়িতে থাকে। দুলাল তার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়শা বেগমকে নিয়ে পাশেই তাদের অন্য এক বাড়িতে থাকতেন। বেশ কিছুদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলে আসছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই পারিবারিক কলেহের জেরে বুধবার রাতের কোনো এক সময় দুলাল তার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়শাকে শ্বাস রোধে হত্যা করে বলে জানান তিনি। ওসি আরো জানান, সকালে দুলাল মেয়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সকাল ৯টার দিকে তিনি তার ১৩ বছরের শিশু মেয়ে শিফাকে ফোন করে স্ত্রীকে হত্যার কথা বলেন। এরপর তার মেয়ে শিফা একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেনি। তবে কিছুক্ষণ পর অপরিচিত এক ব্যক্তি তার মোবাইল থেকে ফোন দিয়ে জানান, মোবাইলের মালিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। চন্দ্রা মন্ডলপাড়ায় গিয়ে আয়শা বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহতের মেয়ে দুলন আক্তার বলে, “বাবা সকালে আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে গেছে। সকাল ৯টার দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, ‘তোর মাকে হত্যা করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দিস। এমনেও মরতে হবে, অমনেও ফাঁসিতে ঝুলে মরতে হবে। তাই আমি মরে যাচ্ছি।’ বলেই ফোন কেটে দেয়।” গাজীপুর রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক আব্দুল মান্নান জানান, খবর পেয়ে উপজেলার কালামপুর এলাকা থেকে ট্রেনের নিচে কাটা পড়া দুলাল উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।