গাজীপুরে এক পোশাক কারখানা স্থানান্তরের প্রতিবাদে ও বকেয়া পাওনাদি পরিশোধসহ ৫ দফা দাবিতে ওই কারখানার শ্রমিকরা আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধ করেছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন ও শ্রমিকরা জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাইনবোর্ড বাদে কলমেশ্বর এলাকাস্থিত ব্যান্ডো ফ্যাশনস লিমিটেড কারখানাটিতে ক্রয়াদেশ নেই। ফলে কর্তৃপক্ষ এ কারখানাটি প্রায় ৩৮ কিলোমিটার দুরে শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজার এলাকাস্থিত এবিএসএস কারখানায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে এ ব্যাপারে কারখানার গেইটে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়। ঈদের ছুটি কাটিয়ে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে আজ মঙ্গলবার সকালে কারখানায় এসে ওই নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এসময় তারা গেইটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর গিয়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে কারখানা স্থানান্তরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ১২০ দিনের নোটিশ প্লে ও প্রতিবছরের সার্ভিস বেনিফিট প্রদান এবং বকেয়া পাওনাদি পরিশোধসহ ৫ দফা দাবি মেনে নেওয়া দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। অবরোধের কারণে ব্যাস্ত ওই মহাসড়কের উভয়দিকে যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনা শেষে এ নিয়ে বুধবার বিকেলে বিজিএমইএ’র সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক করার ঘোষণা দেওয়া হয়। আন্দোলনরত শ্রমিকরা তা মেনে নিয়ে সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়কের অবস্থা তুলে নিলে প্রায় আড়াই ঘন্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এব্যাপারে কারখানার মালিক ফেরদৌস পারভেজ বিভন জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারনে ক্রেতাদের অর্ডার না থাকায় কারখানাটিতে উৎপাদন কাজ নেই। তাই কারখানাটি শ্রীপুরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কাউকে ছাটাই করা হচ্ছে না। এব্যাপারে শ্রীপুরের কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য শ্রমিকদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। স্বল্প সংখ্যক বাদে বেশীরভাগ শ্রমিক শ্রীপুরে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু বহিরাগতদের উস্কানিতে মঙ্গলবার কিছু সংখ্যকরা বিক্ষোভ করেছে। এব্যাপারে বুধবার বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ কারখানায় প্রায় দুই হাজার তিনশ’ শ্রমিক রয়েছে। ইতোমধ্যেই গত জুলাই মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জুলাই মাসের ১০দিনের বেতন পাওনা রয়েছে। শ্রমিকদের ওভারটাইমসহ অন্যান্য ভাতাদি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনা ১০দিনের বেতন পরবর্তীতে পরিশোধ করা হবে।