ePaper

ভোটের মাঠে উত্তাপ-বিএনপিতে প্রার্থীজট অন্যদের একক প্রার্থী

মো. তাসলিম উদ্দিন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সরাইল

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংসদীয় আসন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। বিএনপির একাধিক নেতা(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে সক্রিয় থাকলেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ আসনে একক প্রার্থী দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও গণসংযোগ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামী ঐক্য জোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাই রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও গণসংযোগসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনুপস্থিতিতেও তাদের অনুসারীরা মাঠে কাজ করছেন। এর ফলে প্রতিটি ইউনিয়নে নেতাকর্মীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মধ্যে তৎপরতা ও সক্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির ৯ প্রভাবশালী নেতা, যারা নিয়মিত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহসভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য আহসান উদ্দিন খান শিপন। সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস. এন. তরুন দে, সরাইল উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, সাবেক ছাত্রদল নেতা শেখ মোহাম্মদ শামীম, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাজাহান সিরাজ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ডা. নাজমুল হুদা বিপ্লব, জেলা বিএনপির সদস্য মো. আখতার হোসেন। এ ছাড়া এনসিপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনা আছেন মাওলানা আশরাফ উদ্দিন মাহদি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির মোবারক হোসেন আকন্দ। বাংলাদেশ জমিয়তে উলামা ইসলামে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। শায়খ নেছার আহমেদ আন নাছির (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা মাইনুল ইসলাম খন্দকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইসলামী ঐক্যের জোটের সদস্য সচিব মূফতি বোরহান উদ্দিন সরাইল উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরাইল বিএনপির সভাপতি মো. আনিসুল ইসলাম ঠাকুর বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সরাইল বিএনপির প্রস্তুতি ভালো। প্রতিটি আসনেই মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা কমবেশি কাজ করছেন। তিনি বলেন, এই আসনে বিএনপি যে কোন সময় চাইতে অনেক ঐক্যবদ্ধ। ধানের শীষ মার্কা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। তবে দল যাকে ধানের শীষ প্রতীক দেবে, তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি। সেই চিন্তা মাথায় নিয়েই দল এগোচ্ছে। আমরা দলের সঙ্গে আছি। বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিএনপির ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী। এ নেতা আরও বলেন, শিগগিরই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে মাঠে কাজ করার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দেবে। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস. এন. তরুন দে বলেন, বিগত ১৭ বছর দলের আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। একই সঙ্গে নিজ এলাকায় বিএনপির শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছি। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় আমি নির্বাচন করব।’ সরাইল উপজেলা জামায়েত ইসলামের আমির মো. এনাম খান বলেন, সরকার যদি নির্বাচনী পরিবেশ অনুকূলে আনতে পারে, তা হলে তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ জন্য তারা পূর্বপ্রস্তুতিও রেখেছেন। জমিয়তে উলামা ইসলাম বাংলাদেশের সরাইল কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম লাল বাদশা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাদের দল প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা এলাকায় সভা-সমাবেশ, গত রমজানে ইফতার মাহফিল, ঈদ পুনর্মিলনী, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এবার পবিত্র ঈদুল আজহার পরও এসব মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা এলাকায় নানা অনুষ্ঠানে তৎপর ছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এছাড়া আলোচনা সভা, নির্বাচনী কর্মী সমাবেশ ইউনিয়ন পর্যায়ে করে যাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, আসনটির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আন্দোলন ও ইসি’র সিদ্ধান্তের কারণে ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। বিএনপি’র অধিকসংখ্যক প্রার্থী থাকায় জটিলতাও তৈরি হয়েছে। ৪ লাখ ১০ হাজার ভোটারের এই আসনে বিএনপি’র প্রার্থীরা বেশিবার বিজয়ী হয়েছেন। ২০০১ সালেও এই আসনটি চারদলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। তিনি ওই নির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *