মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানিতে সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার ৫ শতাধিক পুকুর ও দিঘির মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। পুকুরগুলোর মাছ রক্ষার জন্য ব্যবহৃত নেটের দাম বেড়ে যাওয়ায় আরও চরম বিপদে পড়েছেন জেলার মৎস্যচাষিরা।
স্থা নীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, শাহজাদপুর, কাজিপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সদর এলাকায় গত ১ মাসে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলনবিলসহ জেলার নিম্নাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা প্রায় ৫ শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাছচাষিরা ।
একাধিক মৎস্যচাষির জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে আগামী ২-১ দিনের মধ্যে আরো ২ শতাধিক পুকুর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে পুকুরে চাষ করা মাছ বন্যার পানি থেকে রক্ষার জন্য নেট বা জাল দিয়ে বেড়া দিচ্ছেন অনেকেই। গত ১৫ দিন ধরে জেলার উপজেলাগুলোর হাট-বাজারে প্রকারভেদে ১০০০ টাকা বান্ডিলের নেট বা জালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০০-১৮০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে আরও বিপদে পড়েছেন মৎস্যচাষিরা।
তাড়াশ উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের মৎস্যচাষি আব্দুল মান্নান ও জুলমাত হোসেন জানান, ২ বছরের জন্য ৫টি পুকুর সাড়ে ৩ লক্ষ টাকায় ইজারা নেয়। সেই পুকুরগুলোতে রুই, কাতলাসহ দেশীয় মাছ চাষ করেছি। গত ১৫দিন ধরে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৩০ মিনিটের মধ্যে তার ৫টি পুকুর প্লাবিত হয়। এরমধ্যে ২টি পুকুর থেকে ৫ মণেরর মতো মাছ ধরতে পেরেছেন। বাকি মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে। বন্যায় তার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান।
উল্লাপাড়ার মহনপুর গ্রামের মৎস্যচাষি করিম হোসেন জানান, বিলাঞ্চলে পানি বৃদ্ধির ফলে প্রায় হাজার হাজার একর জমি জলায়নের প্রায় মাছ চাষ করা পুকুর ভেসে গেছে। এতে অর্ধকোটি টাকা মুল্যের মাছ ভেসে যাওয়ায় মৎস্যচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী বলেন, জেলায় ৪৮৯টি পুকুর ও ২০টি দিঘি প্লাবিত হয়েছে। যার আয়তন ১৫৭.৬৬ হেক্টর। মাছের পরিমাণ-১২০ মেট্রিক টন। পোনা-৮.৭ হাজার। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। পানি বৃদ্ধি পেলে নতুন করে আরও পুকুর প্লাাবিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।