চট্টগ্রামে রাতে সাদা পোশাকে পুলিশের অভিযানের সময় ধস্তাধস্তিতে বোন আহত হয়ে মাসহ হাসপাতালে যাওয়ার ঘটনার পর বাসা থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এসআই হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
সোমবার(২৭ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন মৃত কিশোর সালমান ইসলাম মারুফের মা রুবিনা আক্তার। মামলায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ২ এর (৬), ১৩ এর উপধারা ১ এবং ১৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় এসআই হেলাল উদ্দিনকে এক নম্বর আসামি করার পাশাপাশি কথিত পুলিশ সোর্স চান্দু, হেলাল ও রুবেলকে অভিুক্ত করা হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত এসআই হেলালকে রেখে বাকি তিনজনকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেন। এছাড়া আদালত মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এসব বিষয় মামলার বাদী রুবিনা আক্তার ও আদালত সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৬ জুলাই রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ মসজিদ গলিতে সোর্স নিয়ে সাদা পোশাকে অভিযানে যায় ডবলমুরিং থানা পুলিশের এসআই হেলাল। এসময় স্কুলপড়ুয়া ছাত্র সালমান ইসলাম মারুফকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তাদের বাধা দেয় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে মারধরের পর কিশোর মারুফের বোন আহত হলে মাসহ তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়, এরপর বাসা থেকে মারুফের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত মারুফ স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পড়ার খরচ চালাতে স্থানীয় একটি মার্কেটের এক দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
ঘটনার পর চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি গত ২০ জুলাই বিকেলে সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে উল্লেখ করা হয়, কর্মকর্তাদের অগোচরে সাদা পোশাকে আগ্রাবাদের বড় মসজিদ গলিতে গিয়ে কিশোর সালমান ইসলাম মারুফের পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন এসআই হেলাল উদ্দিন। ১৮ পৃষ্ঠার ওই তদন্ত প্রতিবেদনে এসআই হেলালকে বরখাস্ত করার সুপারিশের পাশাপাশি এ ঘটনায় থানার ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশের তদারকির ‘ঘাটতি ছিল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।