লিয়াকত হোসেন, ফরিদপুর
ফরিদপুরের কানাইপুরে খাজা বাহিনীর হামলায় ওবায়দুর খান (২৮) নামে এক পুলিশের সোর্সকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারীরা ওবায়দুরের পা ভেঙে চোখে পেরেক ঢুকিয়ে নির্যাতন চালায়। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্প নগরীর কাছে তার ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনার পথে গতকাল রাত ৯টার দিকে পদ্মা সেতু এলাকায় তার মৃত্যু হয়। পেশায় ট্রাক্টর চালক ওবায়দুর কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। তিনি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। এর জেরে স্থানীয় মাদক কারবারিরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওবায়দুরের স্বজনদের। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কানাইপুর বিসিক শিল্প নগরীর কাছের পাম্পে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে আসেন ওবায়দুর। এ সময় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে স্থানীয় ১০-১২ জন ওবায়দুরকে পাম্প থেকে তুলে নিয়ে যায় ফরিদপুর জুট ফাইবার্সের পেছনে। সেখানে ওবায়দুরের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। পেরেক দিয়ে খুঁচিয়ে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলে হামলাকারীরা। এ সময় পিটিয়ে তার বাম পা ভেঙে ফেলা হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা সেখানে গিয়ে ওবায়দুরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যায়। ট্রমা সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাহিরা হোসেন জানান, ওবায়দুরের দুই চোখ ও মাথায় আঘাতের ফলে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ছাড়া তার বাম পা ভেঙে ফেলা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওবায়দুরের বড় ভাই রাজীব খান জানান, ঢাকা মেডিকেলে আনার পথে রাতে পদ্মা সেতু এলাকায় ওবায়দুর মারা যায়। রাজীব অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে ওবায়দুরের ভালো সম্পর্ক ছিল। খায়রুজ্জামান খাজা এলাকায় মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ওবায়দুরের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল খাজা। এর জেরে ওবায়দুরকে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এলাকা সূত্রে জানা যায়, দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী খাজা বহু মামলার আসামী এবং অন্তত একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। আওয়ামীলীগ আমলে খাজা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে ছিল। এখন খাজা নিজেকে বিএনপির নেতা বলেই পরিচয় দিচ্ছে। হয়তো একারণেই মোস্ট ওয়ান্টেড হওয়া সত্বেও পুলিশের ভাষায় পলাতক ছিল খাজা। সাজাপ্রাপ্ত এই দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী খাজা যদি কারাগারে থাকতো, তাহলে আজ হয়তো ওবারদুরকে জীবন দিতে হতো না। কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, যতটুকু জেনেছি ওবায়দুর পুলিশের সোর্স হয়ে কাজ করার কারণে তার ওপর হামলা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।