ePaper

আমদানির প্রভাবে নওগাঁয় কমতে শুরু করেছে চালের দাম

নওগাঁ প্রতিনিধি

দেশের অন্যতম শীর্ষ ধান-চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় কমতে শুরু করেছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম কমেছে ১-২ টাকা। পাইকারি বাজারে চালের দাম কমায় খুচরা বাজারেও কমতে শুরু করেছে চালের দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালে প্রকারভেদে কমেছে ২-৩ টাকা। বিদেশ থেকে সরকারের চাল আমদানি এবং স্থানীয় পারিজা জাতের চাল বাজারে আসায় দাম কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও চালের দাম হঠাৎ করেই কমতে শুরু করায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের। নওগাঁ শহরের আড়তদারপট্টির পাইকারি চাল বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ১-২ টাকা কমে জিরাশাইল ৬৮-৭০টাকা, কাটারিভোগ ৭৫-৭৬, শুভলতা ৬৩-৬৪ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৫৫-৫৬ টাকা, স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫১-৫২ টাকা, মোয়াজ্জেম ও পারিজা জাতের চাল ৫০-৫১ টাকা দরে বিক্রি করছেন মিল মালিক ও আড়তদাররা। এক সপ্তাহ আগে এই মোকামে মানভেদে প্রতি কেজি জিরাশাইল ৭০-৭২ টাকা, কাটারিভোগ ৭৭-৭৮ টাকা, শুভলতা ৬৫-৬৬ টাকা, ব্রি আর-২৮ জাতের চাল ৫৭-৫৮ টাকা, স্বর্ণা-৫ চাল ৫৩-৫৪ টাকা, মোয়াজ্জেম এবং পারিজা জাতের চাল ৫২-৫৩ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল। অপরদিকে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা কমে জিরাশাইল ৭০-৭২ টাকা, কাটারিভোগ ৭৫-৭৭ টাকা, শুভলতা ৬৪-৬৫ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬২-৬৪ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৬-৫৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহে আগে এই বাজারে প্রতি কেজি জিরাশাইল ৭৯-৮০ টাকা, কাটারিভোগ ৭৮-৭৯ টাকা, শুভলতা ৬৬-৬৮ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬৩-৬৫ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৬-৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মেসার্স মালসন রাইস সেন্টারের প্রোপাইটার মানিক প্রামানিক বলেন, গত ৭-৮ দিন ধরে প্রায় সকল ধরনের চাল কেজিতে ২-৩ টাকা করে কমেছে। বর্তমানে মিলগেটে ৫০ কেজি বস্তায় আগের থেকে প্রায় ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত কম দামে পাচ্ছি। এক সপ্তাহ আগে কাটারিভোগ ৫০ কেজি ওজনের বস্তুা কিনেছি ৩৮০০-৪০০০ টাকা দরে বর্তমানে সেই বস্তুা ৩৬০০-৩৭০০ টাকা দরে। দাম কমায় বাজারে চালের চাহিদা তুলনামূলক কম, বেচাকেনাও আগের মতো নেই। চালের দাম কমার বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর আড়তদার পট্টির সততা রাইস এজেন্সির পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সুকুমার ব্রহ্ম  বলেন, সরকারের বিদেশ থেকে চাল আমদান এবং স্থানীয় পারিজা জাতের চাল বাজারে আসতে শুরু করায় প্রায় সকল ধরনের চালে পাইকারি পর্যায়ে এক-দুই টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। আমাদানি অব্যাহত থাকলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। সামনে দাম আরো কমতে পারে। আমদানিকৃত চাল প্রবেশ করায় আমাদের বেচা-বিক্রি কিছুটা কমেছে। সেই সাথে ধানের দাম স্থিতিশীল থাকায় এ দামে চাল বিক্রি করে কিছুটা লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার  বলেন, বর্তমান সময়ে বাজারে অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমদানিকৃত চাল প্রবেশ করছে। এভাবে অনিয়ন্ত্রিতভাবে চাল প্রবেশ করতে থাকলে সারাদেশের কৃষক, মিলার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বে। চাল প্রবেশের বিষয়ে খাদ্য বিভাগের নজরদারি প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *