ePaper

ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ব্যবস্থাপনায় জিপিএইচ ইস্পাত ও বুয়েটের রাইজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি জিপিএইচ ইস্পাত ও বুয়েটের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (রাইজ) মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। “বুয়েটের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এমওএ”-এর আওতায় জিপিএইচ রাইজকে সহায়তা করবে বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে, যেখানে পেটেন্টের গুরুত্ব, সুবিধা, প্রক্রিয়া ও সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হবে, যা ধীরে ধীরে সারা দেশে বিস্তার লাভ করবে।

এ উদ্যোগ দেশের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গঠনে সহায়ক হবে এবং ব্রেইন ড্রেইন রোধে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিল্পখাত ও সমাজের অন্যান্য অংশের উদ্ভাবকরা তাদের নতুন ধারণা সুরক্ষিত করে প্রোটোটাইপ, উন্নয়ন ও বাণিজ্যিকীকরণের সুযোগ পাবেন, যা অতিরিক্ত আয় ও সামাজিক স্বীকৃতির পথ খুলে দেবে। জিপিএইচ ইস্পাত বিশ্বাস করে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা মানেই ভবিষ্যতের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠন। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ভারী শিল্প, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ও ব্যবসায়িক ক্লাস্টার—বিশেষ করে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইসিটি, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরিকল্পনা করছে । উদ্ভাবকদের জন্য একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে জ্ঞান বিনিময় ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়াই জিপিএইচ-এর প্রতিশ্রুতি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। গেস্ট অব অনার ছিলেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাইজের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই উদ্যোগ মূলত গবেষণার ফলকে পেটেন্টের মাধ্যমে সংরক্ষণ ও কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা। এর ফলে মেধা পাচার রোধ করে দেশের প্রতিভাবান শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, জিপিএইচ ইস্পাতের এ ধরনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়, কারণ এতে মেধাস্বত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের উদ্ভাবন ও গবেষণার মেধাস্বত্ব নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব। অতীতে প্রাধান্য না দেওয়ার কারণে অনেক মেধাস্বত্ব হারাতে হয়েছে, তবে এই উদ্যোগ নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আমি আশাবাদী।

গেস্ট অব অনার বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, জিপিএইচ ইস্পাতের কোয়ান্টাম আর্ক ফার্নেস প্রযুক্তি এনার্জি কনজাম্পশনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, যা শিল্প খাতের জন্য একটি অগ্রগতি। শুধু শিল্প নয়, কৃষি, শিক্ষা ও এনার্জি খাতেও আরও বেশি বিনিয়োগ ও গবেষণা প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন, যাতে দেশ টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি রাইজের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, “এটি কেবল একটি সমঝোতা স্মারক নয়, বরং ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার একটি অঙ্গীকার। রাইজের ভিশন হলো গবেষণা ও উদ্ভাবনকে শিল্প ও সমাজের প্রয়োজনের সঙ্গে যুক্ত করে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করা। আমি বিশ্বাস করি, এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা সে লক্ষ্য অর্জনের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।

এ সহযোগিতা বাংলাদেশের গবেষণা ও শিল্প খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। স্মার্ট, উদ্ভাবনী এবং স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে এটি হবে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *