স্পোর্টস ডেস্ক
ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইতোমধ্যে ?দুই দফায় স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন কিংবদন্তি কোচ কার্লো আনচেলত্তি। দু’বারই ইনজুরির কারণে স্কোয়াডে জায়গা হয়নি নেইমার জুনিয়রের। যদিও শেষবার চোটের সমস্যা নয়, কৌশলগত কারণে ডাক না পাওয়ার অভিমত জানান এই তারকা। যা নিয়ে ব্রাজিল কোচের সঙ্গে নেইমারের দ্বিমত দেখা দেয়। নতুন করে তার জাতীয় দলে ঢুকতে পুরোনো শর্ত-ই জুড়ে দিয়েছেন আনচেলত্তি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৭৯) হওয়ার কীর্তি গড়েন নেইমার। এসিএল (অ্যান্টেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট) ইনজুরিতে পড়ে পরের মাস থেকেই তিনি এক বছরের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যান। এরপর আল-হিলাল হয়ে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে ম্যাচ খেললেও, এখনও জাতীয় দলে ফেরা হয়নি ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের। বার্সেলোনা ও পিএসজির সাবেক এই তারকার ক্যারিয়ারজুড়েই ছিল ইনজুরির হানা। যা তার শেষ সময়ে এসেও বারবার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।
চলতি মাসে (সেপ্টেম্বর) বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ দুটি ম্যাচ খেলেছে ব্রাজিল। যার জন্য আনচেলত্তির ঘোষিত প্রাথমিক স্কোয়াডে ছিলেন নেইমার। কিন্তু ম্যাচের দু’দিন আগে চোটে পড়ায় চূড়ান্ত দলে তার জায়গা মেলেনি। এর পেছনে চোট ও ফিটনেসজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছিলেন আনচেলত্তি। কিন্তু নেইমারের ভাষ্য ছিল ভিন্ন, ‘আমাকে বাদ দেওয়ার কারণ ছিল সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল। শারীরিক অবস্থার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটা কোচের সিদ্ধান্ত, আর আমি তা সম্মান করি।’
সম্প্রতি ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবারও শতভাগ ফিটনেস থাকার ওপর জোর দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ। আনচেলত্তি বলেন, ‘আমরা নেইমার কেমন খেলে তা পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছি না, সবাই তার প্রতিভা সম্পর্কে জানে। আধুনিক ফুটবলে নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন ভালো শারিরীক অবস্থা। যদি তার ফিটনেস সেরা অবস্থায় থাকে, তার জাতীয় দলে ঢুকতে কোনো সমস্যা হবে না। সবাই নেইমারকে পরিপূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ব্রাজিল দলে পেতে চায়। যা নিয়ে আমি তার সঙ্গে আগেও কথা বলেছি।’
গত জুনে আনচেলত্তি প্রথমবার সেলেসাওদের স্কোয়াড ঘোষণা করেন। ওই সময় নেইমারের সঙ্গে আলাপের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘প্যারাগুয়ে ম্যাচের আগে সে (নেইমার) হোটেলে এসেছিল। সেখানেও তার ফিটনেস এবং বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেছি। জানিয়েছি ব্রাজিলের জন্য সে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা স্ট্রাইকার হিসেবে নিতে পারি, তাকে খেলতে হবে সবার কেন্দ্রে থেকে। এর বাইরে সে খেলতে পারবে না, কারণ আধুনিক ফুটবল ফরোয়ার্ডদের শারিরীক সক্ষমতা চায়। এটি গুরুত্বপূর্ণ। কোনো সমস্যা ছাড়াই সে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারে।’
ব্রাজিলের প্রধান কোচ হিসেবে মাত্র এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই মাস্টারমাইন্ড। সেলেসাওদের প্রধান লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা। যা যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যদিও বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে আসন্ন আসর খেলতে যাচ্ছে ব্রাজিল। অবশ্য আনচেলত্তির অধীনে তারা খেলেছে কেবল ৪ ম্যাচ, এর মধ্যে দুই জয় এক ড্র ও একটিতে হেরেছে তার শিষ্যরা। ‘বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলকে প্রস্তুত করা বিশেষ কিছু’ বলে মনে করেন আনচেলত্তি।
তবে ইতালিয়ান এই ফুটবল বিশেষজ্ঞের চোখ ব্রাজিলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর দিকে। ২০৩০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দায়িত্বে থাকতে চান আনচেলত্তি, ‘আমি এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ। বিশ্বকাপের পর সবকিছু উন্মুক্ত। যদি আমার সঙ্গে সিবিএফ যাত্রাটা চালিয়ে নিতে চায়, কোনো সমস্যা নেই। এখানে আমি এবং আমার পরিবার খুশি। আমাদের (সিবিএফের সঙ্গে) কথা বলার সুযোগ আছে, এটি চমৎকার বিষয় হবে (যদি ২০৩০ সাল পর্যন্ত থাকতে পারি)।’
