হারুন অর রশিদ
গেমিং ফোন হলো এক ধরনের স্মার্টফোন যা বিশেষভাবে গেমিংয়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ফোনগুলোতে
সাধারণ স্মার্টফোনের চেয়ে উন্নত হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়, যাতে ব্যবহারকারীরা
কোনো ধরনের ল্যাগ বা বাধা ছাড়াই উচ্চমানের গ্রাফিক্সের গেম খেলতে পারে।
গেমিং ফোন চেনার জন্য কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে, যা সাধারণ স্মার্টফোন থেকে কিছুটা আলাদা। একটি
গেমিং ফোন কেনার আগে কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা জরুরি। গেমিং স্মার্টফোনের ফিচার সম্পর্কে
জানা না থাকলে MobileDokan আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সেরা ডিভাইসটি বেছে নিতে পারেন। নিচে গেমিং ফোন চেনার ১০টি উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. শক্তিশালী প্রসেসর
যেকোন স্মার্টফোনের প্রধান উপকরণ হচ্ছে প্রসেসর। গেমিং ফোনেরও প্রধান ফিচার হলো এর প্রসেসর।
স্মার্টফোনের প্রসেসর গেমের গ্রাফিক্স ও পারফরম্যান্সের মূল চালিকাশক্তি। গেমিং ফোনে সাধারণত
Qualcomm Snapdragon, MediaTek Dimensity, বা Apple-এর আপডেট সিরিজের চিপ ব্যবহার করা থাকে।
এসব প্রসেসরের GPU সাধারণ স্মার্টফোনের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।
২. উচ্চ রিফ্রেশ রেটের ডিসপ্লে
একটি স্মুথ গেমিং এর জন্য ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান সময়ে গেমিং ফোনে
সাধারণত ১২০Hz, ১৪৪Hz, বা এমনকি ১৬৫Hz রিফ্রেশ রেটের ডিসপ্লে ব্যবহার করতে দেখা যায়। গেমিং এর
বাস্তবিক অনুভূতি পেতে হলে অবশ্যই উচ্চ রিফ্রেশ রেট ডিসপ্লের স্মার্টফোনের প্রয়োজন হবে।
৩. উন্নত কুলিং সিস্টেম
ভারী গেমিং সেশনের সময় ফোন অতিরিক্ত গরম হয়, যা ফোনের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। গেমিং
ফোনে তাই সাধারণত লিকুইড কুলিং বা ভেপার চেম্বারের মতো উন্নত কুলিং সিস্টেম থাকে, যা ফোনের অভ্যন্তরে
সৃষ্ট তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৪. উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারী
গেমিং করার জন্য প্রচুর পরিমানে চার্জের প্রয়োজন হয়। গেমিংয়ের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে চার্জ ধরে রাখার
মতো ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারির প্রয়োজন। তাই গেমিং ফোনে সর্বনিম্ন ৫,০০০ mAh বা তার বেশি ক্ষমতার
ব্যাটারি থাকা ভালো। এছাড়াও, ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারির ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি যেমন ৬৫W বা ১২০W ফাস্ট
চার্জিং চার্জার থাকলে দ্রুত ব্যাটারি চার্জ করতে সাহায্য করে।
৫. পর্যাপ্ত RAM এবং স্টোরেজ:
ভারী গেম এবং মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত RAM অপরিহার্য। গেমিং ফোনে ৮GB থেকে ১৬GB পর্যন্ত
RAM থাকে, যা গেম লোডিং এবং খেলার সময় ল্যাগ কমাতে সাহায্য করে। স্টোরেজ গেম ফাইল এবং অন্যান্য
ডেটা সংরক্ষণের জন্য ২৫৬GB বা তার বেশি স্টোরেজ থাকলে ভালো হয়।
৬. উন্নত অডিও সিস্টেম
গেমিংয়ের সময় শব্দের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ফোনে গেমিং করার সময় গেমিং এর শব্দ মনোযোগ
আকর্ষণ করে। প্রায় সকল গেমিং ফোনে ডুয়াল স্পিকার এবং হাই-রেজোলিউশন অডিও প্রযুক্তি থাকে, যা একটি
ক্লিয়ার অডিও প্রদান করে। কিছু ফোনে হেডফোন জ্যাক এবং উন্নত সাউন্ড কনভার্টার থাকে।
৭. গেমিং ডিজাইন
গেমিং ফোনের ডিজাইন সাধারণত সাধারণ ফোনের থেকে আলাদা হয়। এই ধরনের মোবাইল ফোনে গেমিংয়ের জন্য
অতিরিক্ত বাটন, RGB লাইটিং এবং এরগনোমিক গ্রিপ ডিজাইন থাকে, যা ফোনটিকে হাতে ধরতে ও
আরামদায়কভাবে গেমিং করতে সহয়ায়তা করে।
৮. টাচ রেসপন্স রেট
একটি গেমিং ফোনের স্ক্রিনের টাচ রেসপন্স এবং টাচ স্যাম্পলিং রেট সাধারণ ফোনের চেয়ে বেশি হবে। টাচ
রেসপন্স এবং টাচ স্যাম্পলিং রেটের ফলে স্মার্টফোনের টাচ ইনপুটগুলো দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করে।
ফলে দ্রুত গতির গেম খেলার জন্য এই ধরনের ফিচার বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
৯. গেমিং মোড ও সফটওয়্যার
গেমিং ফোনে গেমিং মোড থাকে, যা গেম খেলার সময় মোবাইল ফোনের নোটিফিকেশন ব্লক করা, পারফরম্যান্স
অপটিমাইজ করা এবং গেমিংয়ের জন্য ডেডিকেটেড সেটিংস কাস্টমাইজ করতে সাহায্য করে। এই
সফটওয়্যারগুলো গেম খেলার অতিরিক্ত ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখে এবং গেমিং অভিজ্ঞতাকে আরও
আনন্দদায়ক করে।
১০. অতিরিক্ত গেমিং অ্যাক্সেসরিজ
বর্তমান বাজারে কিছু গেমিং স্মার্টফোন কোম্পানি মোবাইল ফোনের সাথে অতিরিক্ত গেমিং অ্যাক্সেসরিজ
দিয়ে থাকে, যেমন: ক্লিপ-অন কুলার, এক্সটার্নাল গেমিং কন্ট্রোলার, বা গেমিং কেস, যা গেমিং অভিজ্ঞতাকে
আরও সমৃদ্ধ করে।
