নিজস্ব প্রতিবেদক
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে কতিপয় ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না করে প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীরা। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মেজর (অব.) এম রেজাউল হক এসময় সাবেক পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর, ব্যাংকটির উদ্যোক্তা চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আসাদুজ্জামান ও শেয়ারহোল্ডার জাবেদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সহয়তায় অস্ত্রের মুখে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক ও অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারদের সমন্বয়ে গঠিত পরিচালনা পর্ষদ নিয়ন্ত্রণে নেয়। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এস আলম কর্তৃক দখল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশের সব শরীয়াহ ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বদা দ্বিতীয় ব্যাংক হিসেবে পরিগণিত ছিল।
‘বিগত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক অত্র ব্যাংকের এসআলম কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও মাত্র ১ জন উদ্যোক্তা পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে, যা ছিল ব্যাংকটিকে আর্থিক দূরবস্থা থেকে টেনে তোলার বা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটি অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত। অধিকন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে উদ্যোক্তা পরিচালককে পাশ কাটিয়ে একজন অনভিজ্ঞ স্বতন্ত্র পরিচালককে নির্বাচিত করা হয়। অনেক উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারের পরিচালক হওয়ার যাবতীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এবং বর্তমান পরিচালনা পর্ষদে তাদের যুক্ত করার জন্য বারংবার অনুরোধ করা হলেও অনভিজ্ঞ পরিচালনা পর্ষদ ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি আমলে নেয়নি। ফলে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের ওপর ব্যাংকের পরিচালনার কার্যভার অর্পিত না হওয়ায় গ্রাহকরা অনাস্থার কারণে ব্যাংক থেকে তাদের সব ডিপোজিট তুলে নেয়, যা ব্যাংকের দূরবস্থাকে আরও ঘনীভূত করেছে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক যাদের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তারা কেউই কোনো ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে পূর্বে যুক্ত ছিল না কিংবা ব্যাংকের পরিচালনার বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞ নন। এছাড়া বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক, একজন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেউই ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নন। ব্যাংকটিকে একীভূতকরণ না করে পরিচালনার দায়িত্ব যদি প্রকৃত উদ্যোক্তা ও এর শেয়ারহোল্ডারদের হাতে ন্যস্ত করা হয়, তাহলে খুব দ্রুত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক তার গ্রাহকের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারবে এবং ব্যাংকের আর্থিক দূরাবস্থা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে এবং বাণিজ্যিকভাবে পুনরায় একটি লাভজনক ও সফল ব্যাংকে রূপান্তরিত হবে।
