মেহেরপুর প্রতিনিধি
ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধুত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল পচি খাতুনের শেষ ইচ্ছা পূরণের ঘটনা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার চাপড়া থানার হৃদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত জামাত শেখের স্ত্রী পচি খাতুন (৬৫) মৃত্যুর আগে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যেন মৃত্যুর পর অন্তত একবার বাংলাদেশে থাকা তার নানাবাড়ির আত্মীয়স্বজন তার মরদেহ দেখতে পারেন। শনিবার সকালে পচি খাতুনের মৃত্যু হলে, তার পরিবারের সদস্যরা ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর কাছে তার শেষ ইচ্ছার কথা জানায় এবং মরদেহ সীমান্তে এনে আত্মীয়দের দেখার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। মানবিক এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিএসএফ যোগাযোগ করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দ্রুতই আয়োজিত হয় কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক। ভারতের চাপড়া কোম্পানির কমান্ডার মিঠুন কুমার এবং বাংলাদেশের মুজিবনগর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার আবুল বাশারের নেতৃত্বে সীমান্তের ১২৫ নম্বর মেইন পিলারের কাছে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর মৃতদেহটি সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে আনার অনুমতি দেওয়া হয়। পচি খাতুনের মরদেহ আনা হয় মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর নতুনপাড়ার সীমান্তে। সেখানে প্রায় ২৫ মিনিট ধরে আত্মীয়স্বজনরা তাকে শেষবারের মতো দেখে বিদায় জানান। এই সময় আশপাশের এলাকাগুলোর অনেক মানুষও উপস্থিত ছিলেন, যারা চোখের জল ফেলেছেন দুই দেশের সীমান্তের এমন মানবিকতায়। দেখা শেষে মরদেহটি পুনরায় ভারতের হৃদয়পুরে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং সেখানে তার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
