ePaper

পানেরছড়া বিটে পাহাড় কেটে মাটি পাচার, বনভূমি দখল অভিযোগের তীরে বিট কর্মকর্তা

নুরুল আলম সিকদার, কক্সবাজার

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের পানেরছড়া বিট কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা ও বন প্রহরী মোহাম্মদ সিয়ামের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য, বনের জমি দখলকারীদের সহযোগিতা এবং পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুলাবাগান রেঞ্জের পানেরছড়া বিট ও আশপাশের আঞ্জুঘোনা, হোয়ারিয়া ঘোনা, চিকনছড়ি ও লম্বাঘোনা এলাকায় প্রতিদিন পাহাড় কেটে ডাম্পার গাড়িতে মাটি পাচার করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। একই সঙ্গে বনতলা এলাকায় বনভূমিতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। সংরক্ষিত বাগান থেকে গাছ কাটার ঘটনাও নিয়মিত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব বন ধ্বংসে সরাসরি জড়িত রয়েছে লম্বাঘোনার নজরুল ইসলাম, আবু তাহের, বনতলার শাহজাহানসহ কয়েকটি দলীয় সিন্ডিকেট। তারা বনতলা থেকে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে অবাধে। পানেরছড়া স্টেশনের পশ্চিম ও পূর্ব পাশে বলিপাড়া এলাকার ছৈয়দ নুর নিয়মিত বনভূমি দখল ও পাহাড় কেটে বালু বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া সুইস এলাকায় একাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বাড়ি নির্মাণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এরা বর্তমানে বিএনপির নাম ব্যবহার করে পাহাড় কাটা ও বালু পাচার করছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কেউ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশের এলাকায় বনভূমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে গরু ও মুরগির খামার। এমনকি প্লট আকারে বনভূমির জমি বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, এসব ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিদিন ঘটলেও বিট কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বনভূমি রক্ষায় আমি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। পাহাড় কাটা বা বালু উত্তোলনের খবর পেলেই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে স্থানীয়রা বলেন, বিট কার্যালয়ের পাশের সড়ক দিয়েই প্রতিদিন মাটি ভর্তি ডাম্পার চলাচল করছে। আমিনের ঘোনা এলাকা থেকেও নিয়মিত বালু উত্তোলন হচ্ছে, যা চোখে পড়ার মতো দৃশ্য। তবু বন বিভাগের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। পরিবেশবিদরা বলছেন, নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বালু উত্তোলন ও বনভূমি দখল চলতে থাকলে এলাকায় ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *