শেখ ইলিয়াস মিথুন,মাগুরা
মাগুরার মহম্মদপুর সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান এবং দোকান বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত টাঙ্গাইল জেলার একটি কলেজের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে পরবর্তীতে জাল করে নিজ বিদ্যালয়ের নামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিটি প্রধান শিক্ষক নিজেই সত্যায়ন করেন এবং এর ভিত্তিতে তার বোনসহ ছয়জনকে নিয়োগ দেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৫ সালের একটি পরিপত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, ২২ অক্টোবর থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এরপর প্রকাশিত কোনো বিজ্ঞপ্তি অবৈধ গণ্য হবে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক পুরোনো বিজ্ঞপ্তিকে ব্যবহার করে নিয়োগ বৈধ দেখানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আরও রয়েছে, বিদ্যালয়টি প্রায় ‘স্বজনপ্রীতিমূলক প্রতিষ্ঠান’-এ পরিণত হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনরা শিক্ষক ও কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ শিক্ষক আকবর হাসমত দিলু (প্রধান শিক্ষকের ভাগ্নে), শিক্ষক রোজিনা রোকসানা (প্রধান শিক্ষকের মামী),শিক্ষক খুরশিদ রহমান তিতাস (প্রধান শিক্ষকের বেয়াই),শিক্ষক চায়না সুলতানা (প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর বোন),শিক্ষক শামীম মিয়া (প্রধান শিক্ষকের ভাগ্নে), আয়া আরমিন শিরিন (প্রধান শিক্ষকের বোন), করণীক রুনা আক্তার (প্রধান শিক্ষকের ভাবি)। অভিযোগ রয়েছে, এসব নিয়োগের মধ্যে কিছু পরবর্তীতে জাতীয়করণের মাধ্যমে বৈধ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আরও আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদ্যালয়ের সামনের মার্কেটে দোকান বরাদ্দ সংক্রান্ত অভিযোগও সামনে এসেছে। অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন, দোকান বরাদ্দের নামে টাকা নেওয়া হলেও প্রকৃত বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।” জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, “নিয়োগের সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানই ভালো জানবেন।” স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ এবং দোকান বরাদ্দে অনিয়ম শুধু অনিয়ম নয়, এটি পরিকল্পিত প্রতারণার উদাহরণ। তারা দ্রুত তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
