মোহাম্মদ আলী,ভোলা
ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার চরের মানুষ আজও নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ২০২০ সালের ভয়াবহ ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় চর জহির উদ্দিনের বিশাল অংশ। সেই সাথে নিশ্চিন্তপুর সিকদার বাজার এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, দিদার মাঝি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বিশারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়ক, সেতু ও মসজিদ নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। পরবর্তী কয়েক বছরে সিডার চড়ের প্রায় ২০০ ফিট দৈর্ঘ্যের ব্রিজ, মরিয়ম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোট-বড় অসংখ্য ব্রিজ ও কালভার্ট, প্রায় ৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা এবং প্রায় ৫০টি মসজিদ ঘর ভেঙে যায়। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। প্রতি বছর শত শত পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে সহায়-সম্বল হারিয়ে দ্বীপে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও বাস্তব কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। স্থানীয়দের দাবি, গত দুই বছরে প্রায় ১০০ প্লট (১ প্লট = ১৫০ শতাংশ জমি) নদী ভাঙনের ফলে বিলীন হয়ে গেছে। চরের মানুষ নদী ভাঙন রোধে ব্লক বা জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানালেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না হলে অচিরেই নাগর পাটোয়ারীর চর, চর লাদেন, চর ফারজানা, তেলিয়ার চর ও চর মোজাম্মেল ভাঙনের মুখে পড়বে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বহু স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র। এতে প্রায় ৭০ হাজার প্রান্তিক কৃষক-জেলে পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, “নদী ভাঙন আমাদের আজীবনের দুঃখ। সরকারের টেকসই বাঁধ নির্মাণ ছাড়া এই জনপদ রক্ষা করা সম্ভব নয়।”
