নুরুল আলম সিকদার, কক্সবাজার
কক্সবাজার বদর মোকাম সংলগ্ন খুরুশকুল মৌজার উকিল পাড়ার জনগন সীমাহিন উচ্ছেদ আতংকে দিন যাপন করছেন। সরকারকে ভুল তথ্যে দিয়ে নিজ নিজ মালিকানাধীন বসতবাড়ি থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করছে উঠে পড়ে একটি স্বার্থনেষী মহল। এই থেকে পরিত্রান পেতে এলাকাবাসী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। উকিল পাড়া সমাজ কমিটির কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, কক্সাবাজার মৌজার বি.এস ২২৬২ নং দাগে বাঁকখালি নদী। যা ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত। বেলা কর্তৃক দায়েরী রিট পিটিশন মামলা নং-৮৩২৫/১৪ ইং এর অন্তর্ভুক্ত, উক্ত বি, এস ২২৬২ দাগের খাল শ্রেণীর জমি হয়। উক্ত মামলার তফসিলে কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অন্তর্ভুক্ত নাই। প্রবাহমান নদী হতে এক কিলমিটার দুরে খুরুশকুল মৌজার ব্যক্তি মালিকানাধীন বি.এস ২২৮১, ১৭০৯ খতিয়ান, যাহার বিএস দাগ নং ১৫২৪৪, ১৫২৪৫, ১৫৪১৩, ১৫৪১৪ দাগ বর্তমানে বদর মোকাম সংলগ্ন উকিল পাড়ায় ২৬ জন আইনজীবী সহ ৩০০ অধিক ঘরবাড়ি আছে যাহাতে তিন হাজারের অধিক জনগন বসবাস করছে। বিগত ফ্যসিবাদ আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিগত ২৮/০২/২৩ ইং তারিখে বেলা কর্তৃক দায়েরী রিট পিটিশন মামলা নং ৮৩২৫/১৪ বিপরীতে কনটেন্টম্ট মামলায় প্রচারিত মিথ্যা আদেশের দোহাই দিয়ে আওয়ামীচক্র তৎকালীন জেলা প্রশাসকের যোগসাজশে উপরোক্ত ব্যাক্তি মালিকানাধীন রেজিস্ট্রার ও খতিয়ানভুক্ত জনগণের ঘরবাড়ি বিনা নোটিশে বেআইনিভাবে উচ্ছেদ করে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পক্ষে কনটেন্টম্প মামলাটি চ্যালেন্জ করিলে মহামান্য হাইকোর্ট বেলার দায়েরকৃত কন্টেন্টম্প মামলাটি লিষ্ট আউট করে দেন। উচ্ছেদের আগে উকিলপাড়ার জনগন উপরোক্ত ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১নং আদালত কক্সবাজার মহোদয় এর নিকট অপর ২৪/২৩ইং মামলা দাযের করে সরকারের বিরুদ্ধে বিগত ২৮/০২/২০২৩ ইং তারিখ নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রাপ্ত হয়। উক্ত নিষেধাজ্ঞা জেলা প্রশাসক অমান্য করায় তাহার বিরুদ্ধে ভায়োলেশন মিচ-১৮/২৩ মামলা হয় উভয় মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে। বি.এস ১৭০৯ নং খতিয়ানে বেক্তি মালিকানাধীন জমি হইতে সরকার খুরুশকুল নতুন ব্রিজের রাস্তার জন্য ১৪৪১৩, ১৪৪১৪ দাগের অধিগ্রহণ করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত মালিককে ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মালিকরা সরকার ভুমি মন্ত্রণালয় ইওডঞঅ সহ সরকার সংশ্লিষ্ট সমস্ত বডিকে বিবাদী করে মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৩০৯৫/২৪ইং মামলা দাযের করে সরকারের বিরুদ্ধে বিগত ১২/০৩/২৪ইং তারিখে নিষেধাজ্ঞা আদেশপ্রাপ্ত হয়। সরকার উক্ত আদেশ বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে সিভিল মিচ পিটিশন নং ৩০০/২৪ ইং মামলা দায়ের করেন, চেম্বার জজ আদালত উক্ত নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল রেখে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন, যাহা মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপিল মামলা নং ১৫৩৪/২৪ইং মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। উক্ত আপিল মামলাটি বিগত ১৩/০৫/২৪ ইং তারিখ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান হস চারজন বিচারপতি সমন্বয়ে দুতরফা সুত্রে নিষ্পত্তি হয়। আপিল আদালত মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে এবং সরকারকে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি প্রয়োজন হলে আইনগতভাবে ক্ষতিপূরণ পুর্বক অধিগ্রহণ ও কোন ধরনের অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম না কারার জন্য আদেশ প্রদান করেন। কক্সবাজার বদরমোকামস্থ উকিলপাড়ার স্থানীয় জনগন মহামান্য হাইকোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিষেধাজ্ঞার আদেশ যথাযথ প্রতিপালন করার জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রত্যাশা করে। বাঁকখালি নদীর জায়গা কক্সবাজার মৌজার বি.এস ২২৬২ নং দাগ ও খতিয়ান মোতাবেক খাল শ্রেণীর জমি উচ্ছেদ হলে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মালিকদের কোন ধরনের ওজর আপত্তি নাই। ব্যক্তি মালিকানাধীন বি.এস ২২৮১, ১৭০৯ নং খতিয়ানের হাল-সন খাজনার দাখিলা বর্তমানে চলমান আছে। উকিল পাড়ার সমাজ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, উকিলপাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায়। জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই সরকারকে রেভিনিউ দিযেই আমরা জায়গা কিনে এখানে বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছি। এখানে ৫ শতাধিক পরিবার রয়েছে। কিন্তু একটি মহল সরকারকে ভুল তথ্য দিযে এটিকে খাস জমি দেখিয়ে উচ্ছেদ করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমি এর প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে বসবাসকারীদের সুরক্ষা দিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
