বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার রাজাপুর ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। বছরের পর বছর কোনো সংস্কার না হওয়ায় ভবনটি এখন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক ও স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিশুরী ইউনিয়নের রাজাপুর ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবনের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে আছে। দরজা-জানালাও ভেঙে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে। প্রায় ২২ বছর আগে নির্মিত এ ভবনটি নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও পরে আর কোনো সংস্কার হয়নি। চার কক্ষের ওই ভবনের দুটি কক্ষে বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠদান চলছে। অপর দুটি কক্ষ ব্যবহৃত হচ্ছে সুপার এবং শিক্ষকদের অফিস হিসেবে। পাশেই রয়েছে একটি টিনশেড ভবন, যার মেঝে মাটির। বৃষ্টি হলে টিন ফুটো দিয়ে পানি পড়ে কাদা জমে যায়। একটু বাতাসেই কাঁপতে থাকে পুরো ঘর, ফলে বর্ষায় পাঠদান প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দশম শ্রেণির ছাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে, ক্লাসে ঢুকলে আতঙ্কে থাকি। বই-খাতা নিয়ে বসে থাকলেও মনে থাকে না পড়া।’ সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তার জানান, ‘বৃষ্টির দিনে টিনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, তখন কাদার মধ্যে বসেই ক্লাস করতে হয়। বইও ভিজে যায়। বেশি বাতাস হলে মনে হয় ঘর ভেঙে যাবে।’ স্থানীয় অভিভাবক মো. আলামিন বলেন, ‘বাচ্চারা প্রতিদিন ভয়ের মধ্যে স্কুলে যায়। আমরা চিন্তায় থাকি কখন কী হয়।’ সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান জানান, ‘এ রকম পরিবেশে পাঠদান সম্ভব না। শিক্ষার্থীরা ভয় আর উৎকণ্ঠার মধ্যে ক্লাস করে, ফলে মনোযোগও থাকে না।’ মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. লোকমান হোসেন বলেন, ‘৫ বছর ধরে ভবনের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরে ভবন নির্মাণের আবেদন দিয়েছি, কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই।’ এ বিষয়ে পটুয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। অনুমোদন মিললেই ভবন নির্মাণ শুরু হবে।’
