রবিউল ইসলাম (ঢাকা) ধামরাই
ঢাকার ধামরাইয়ে মম ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। প্রায় ১ ঘণ্টা পর শিল্পপুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে তাদের সরিয়ে দেয়। গতকাল বুধবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জয়পুরা এলাকায় কারখানার সামনে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। পরে ৯টার দিকে সড়ক ছেড়ে যায় তারা। শ্রমিকরা জানায়, সকালে কারখানায় এসে গেটে তালা ও কারখানা বন্ধ ঘোষণার নোটিশ দেখতে পান তারা। নোটিশে বন্ড লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতায় আমদানি বন্ধ ও ক্রয়াদেশ না পাওয়ায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর প্রতিবাদে সকাল ৮টার দিকে তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা চলতি মাসের পূর্ণ বেতন ও বিভিন্ন পাওনাদি পরিশোধসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে ৯টার দিকে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয় তারা। তবে এরপরও শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলে তারা ১০টার দিকে অবরোধ ছেড়ে দেয়। এদিকে মম ফ্যাশন লিমিটেড কর্তৃপক্ষের দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, গত তিন মাস ধরে কাজ না থাকায় শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়মিত ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স সম্পর্কিত বড় ধরনের জটিলতা হওয়ায় সকল প্রকার আমদানি বন্ধ আছে। যার সমাধান সময়সাপেক্ষ। লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ক্রেতারাও কাজ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া অন্য কোনো কাজও পাওয়া যায়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ ইং এর ১২ এবং ১৬ ধারা মোতাবেক ২৬ আগস্ট ২০২৫ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হলো। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৯ এর ধারা ১৬ মোতাবেক ক্ষতিপুরণ দেওয়া হবে। এছাড়া এরমধ্যে পরিস্থিতি উন্নতি হলে কারখানার নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। মম ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মনির হোসেন বলেন, আমাদের কারখানায় কাজকর্ম নেই। কারখানা ১ মাস ১৫ দিন লে অফ করা হয়েছে। এজন্য শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি করেছে। আমরা তাদের নিয়ে বসেছি। সেখানে সমাধান করা হবে। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, মালিক শ্রমিক বিজিএমইএ সবাই মিলে আমাদের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছেন। প্রায় ৩০০-৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। কারখানাটি গতকাল লে অফ করা হয়েছিল, এরই প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করেন। প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সড়ক অবরোধ ছিল। আশা করছি বৈঠকে একটি সমাধান আসবে।
