ePaper

পয়েনসেটিয়ার জাতের বাহার: ক্রিসমাসের রঙে সাজানো বাহারি ফুলের রাজ্য

পয়েনসেটিয়ার জাতের বাহার: ঢাকার আগারগাঁওয়ে ফ্যালকন নার্সারিতে বিভিন্ন রঙের পয়েনসেটিয়া ফুলের সুন্দর প্রদর্শনী।
পয়েনসেটিয়ার জাতের বাহার: ফ্যালকন নার্সারিতে দেখা যাচ্ছে নানা রঙের পয়েনসেটিয়া ফুল, যা শীতকালীন সজ্জার অন্যতম আকর্ষণ।

পয়েনসেটিয়ার জাতের বাহার: ঢাকার আগারগাঁওয়ে ফ্যালকন নার্সারিতে দেখা যাচ্ছে ক্রিসমাসের ঐতিহ্যবাহী পয়েনসেটিয়ার বিভিন্ন জাতের বাহার। পয়েনসেটিয়া, যাকে ‘ক্রিসমাস ফুল’ বা ‘পত্রমঞ্জরি’ বলা হয়, শীতের ঋতুতে সেজে ওঠে বিভিন্ন রঙের পত্রপল্লবে। মেক্সিকো থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় এই ফুলটি, বর্তমানে বাংলাদেশেও বিভিন্ন জাতের প্রকারে পাওয়া যাচ্ছে, যা ক্রিসমাসের সজ্জা ও উপহার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ক্রিসমাসের সময় পয়েনসেটিয়া ফুলের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ২২ ডিসেম্বরের পর, শীতের প্রকৃতি ও ক্রিসমাসের আবহের সাথে মিলিয়ে পয়েনসেটিয়া গাছগুলো যেন এক নতুন রূপে পল্লবিত হয়। মেক্সিকোর কিংবদন্তি অনুযায়ী, ক্রিসমাসে ঈশ্বরের উপহার দেওয়ার উদ্দেশ্যে এক গরিব মেক্সিকান বালিকা পেপিতা গাছের কুঁড়ি দিয়ে ফুল তৈরি করেছিল, যা পরবর্তীতে রক্তিম লাল ফুলে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে পয়েনসেটিয়া ফুলকে “ক্রিসমাস ইভ ফ্লাওয়ার” হিসেবে পবিত্রতা ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয়।

এ বছর ঢাকার আগারগাঁওয়ে ফ্যালকন নার্সারিতে পয়েনসেটিয়ার ৯টি জাত দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সাদা, গোলাপি, হলুদ ও লাল রঙের বিভিন্ন প্রকার, যা ক্রিসমাসের জন্য বিশেষভাবে চাষ করা হচ্ছে। সেখানে নতুন জাত হিসেবে থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে আটটি নতুন পয়েনসেটিয়া জাত, যেগুলোর পাতা ও ফুলের রং একেবারে বিশেষ ধরনের, যা আগের জাতগুলোর তুলনায় আলাদা। কিছু জাতের ফুলের ডগা সাদা, কিছু গোলাপি, আবার কিছু ফুলের পাতার মধ্যে হলুদ ও লাল আভা রয়েছে।

পয়েনসেটিয়া গাছের চাষ এবং সেবা সহজ এবং সুবিধাজনক, যা টবে অথবা ছোট বাগানে লাগানো সম্ভব। এটি মূলত নরম কাণ্ডের গুল্ম প্রজাতি এবং এর পাতা সূচালো ও সরু। ইউফরবিয়েসি গোত্রের এই ফুলটি বহুবর্ষজীবী, অর্থাৎ একবার লাগালে এটি দীর্ঘদিন বাঁচে এবং প্রতি বছর শীতকালীন সময়েই ফুল ফোটায়।

উল্লেখযোগ্য যে, ১৮০০ সালের বিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী জোয়েল রবার্টস পয়েনসেটের নামানুসারে এই ফুলের নামকরণ করা হয়। মন্ত্রী হলেও তিনি ছিলেন একজন উদ্ভিদবিদ, এবং তাঁর নামেই আজ বিশ্বজুড়ে এই ফুলটি পরিচিত।

বাংলাদেশে পয়েনসেটিয়ার চাষ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং এটি শীতকালীন গৃহসজ্জার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা বাগানে এই ফুলটি লাগিয়ে, ক্রিসমাসের পরিবেশ আরও মধুর ও রঙিন করা যায়।

এখন দেশের বিভিন্ন নার্সারিতে পয়েনসেটিয়ার এই বিশেষ জাতগুলি সহজেই পাওয়া যাচ্ছে, যা ক্রিসমাসের সময় ঘর সাজাতে বা উপহার হিসেবে দিতে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

উপসংহার: পয়েনসেটিয়া গাছের বিভিন্ন জাতের বাহারে ক্রিসমাসের মরসুমে দেশজুড়ে এক নতুন আভা সৃষ্টি হয়েছে। ফ্যালকন নার্সারির মতো জায়গায় গিয়ে আপনি এখনো পয়েনসেটিয়ার বিভিন্ন রঙের জাত দেখতে পারেন, যা শীতের মৌসুমে বাড়ির সজ্জাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

Share Now

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *