ePaper

সাংবাদিকদের নির্যাতন প্রতিবাদে সোনাইমুড়ীতে মানববন্ধন

মাকসুদ আলম (নোয়াখালী) সোনাইমুড়ী

সন্ত্রাসের জনপদ খ্যাত গাজীপুর জেলার চাঁদনা চৌরাস্তায় স্থানীয় চিহ্নিতি অস্ত্রধারী কেটু মিজান বাহিনী কর্তৃক সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে পৈশাচিকভাবে ইট দিয়ে পুরো শরীর থেঁতলিয়ে গুরুত্বর আহত করা ও সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিভিন্ন ফেক আইডি থেকে অনৈতিক পোস্ট করা, সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে সোনাইমুড়ীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় সোনাইমুড়ী বাইপাস চত্বরে সোনাইমুড়ীতে কর্মরত সাংবাদিকদের উদ্যোগে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৫ আগস্টের পর থেকেই স্থানীয় প্রশাসন গাছাড়া ভাব নিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় দেশব্যাপী অপরাধীরা প্রশ্রয় পেয়ে- দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাটে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, মাদক ব্যবসাসহ অন্যায়-অবিচারে পুরো দেশের আইনশৃঙ্খলা দিনদিন অবনতির পথে। কোথাও কোন সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নাই। কোন না কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী অপরাধীরা দেশে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে বলে মনেই করে না। ফলশ্রুতিতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা দেশজুড়ে তান্ডবলীলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে। এতে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিসহ দিনদিন সন্ত্রাসীদের রাম রাজত্ব কায়েম হচ্ছে। এসব অসঙ্গতি তুলে ধরে যখনি কলম সৈনিক “সাংবাদিকরা” সংবাদ প্রচার-প্রকাশ করে, তখনই সিন্ডকেট করা খুনকার বদ্ধ উজারা তাদের দলবল নিয়ে সাংবাদিকদের মানহানিতে ব্যস্ত হয়ে বিভিন্ন ফেক আইডির মাধ্যমে,  গডফাদারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও ছত্রচ্ছায়ায় সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট সংবাদ কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও খুন-জখমের ঘটনা ঘটায়। গত ২০ বছরে কয়েক হাজার সংবাদকর্মী গুম খুন ও হামলার শিকার হয়েছে। কোনটিরও সঠিক বিচার হয়নি। সাংবাদিক মহল বারবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও প্রশাসন ও রাষ্ট্র সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আইন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ দেশে পশু-পাখি, বন্য প্রাণী সুরক্ষার জন্য শাস্তির বিধান রেখে প্রচলিত আইন থাকলেও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য কোন আইন নেই। যার ফলশ্রুতিতে অপরাধ সিন্ডিকেট খুব সহজেই সাংবাদিকদেরকে টার্গেট করে হামলা, মিথ্যা মামলা, গুম-খুনের মধ্য দিয়ে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ ও সাংবাদিক নিধনে বেপরোয়া হয়ে উঠতে সহায়তা করছে। এ দেশ কখনো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হবেনা। যেখানেই অন্যায়, সেখানেই সাংবাদিকদের কলমে প্রতিবাদ। কখনই সংবাদ পত্র ও সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যাবেনা। গাজীপুরে গভীর ষড়যন্ত্রে ৭ আগস্ট দুপুরে চাঁদনা চৌরাস্তায় চিহ্নিতি সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে ইট দিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন। গুরুতর আহত করা ও একই দিন সন্ধ্যার পরে জনসম্মুখে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে, ওরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী বিদায় লোকজন হত্যার ঘটনা স্বচক্ষে দেখেও তুহিনকে রক্ষায় এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। সাংবাদিক নির্যাতন ও তুহিন হত্যাকান্ডে জড়িত সকল অপরাধী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা ও অনতিবিলম্বে সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন ও কার্যকর করতে মানববন্ধন থেকে রাষ্ট্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনের প্রতি বক্তারা জোর দাবী জানান। মানববন্ধনে উপজেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিকসহ দুর্নীতি ও অপরাধমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করে। সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক স¤পাদক নুর মোহাম্মদ সবুজের সার্বিক সহায়তা ও ইয়াকুব আল মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি, মাকসুদ আলম, সাবেক সভাপতি আ.ন.ম মোশাররেফ হোসেন সুমন, সাবেক সাধারণ স¤পাদক আমিনুল ইসলাম মানিক, সাধারণ স¤পাদক ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি সেলিম মিয়া, কালবেলা প্রতিনিধি সৈয়দ শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক খোরশেদ আলম, শামছুল আরেফিন জাফর, বেলাল হোসেন ভুঁইয়া, মাহবুবুল হাসান, ইয়াসিন শরীফ অনিক, হানিফ রানা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *