কুয়াকাটা প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে এফবি সাগরকন্যা নামের একটি মাছধরা ট্রলার ও ইদ্রিস (৫০) নামের এক জেলের মরদেহ ভেসে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সৈকতের ডিসি পার্কসংলগ্ন সাগরে ট্রলার ও লাশটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নৌ-পুলিশের একটি টিম লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পরনে একটি লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট ছিল। লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট দেখে লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন তার ভাতিজা সাগর। ওই জেলে কলাপাড়া উপজেলার মধুখালীর বাসিন্দা ছিলেন। ইদ্রিসের ভাতিজা সাগর বলেন, ‘আমিও ২৬ জুলাই এই ট্রলারে চাচার সঙ্গে ছিলাম। ট্রলারটি ডোবার সঙ্গে সঙ্গে চাচাও ওই সময় ডুবে যায়। এ সময় চাচার পরনে লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট ছিল।’ গত ২৬ জুলাই সকাল ১০টার দিকে কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়া থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার গভীরে ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এর আগে, ২৫ জুলাই মহিপুর থেকে ১৫ জেলে নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ট্রলারটির মাঝি আবদুর রশিদ। ট্রলারটিতে ১৫ জন জেলে ছিলেন। চার দিন সাগরে ভেসে থাকার পর জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ১০ জন। নিখোঁজ ৫ জনের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামের একজনের লাশ গত শুক্রবার কুয়াকাটার মীরা বাড়িসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়। এখনও আবদুর রশিদ, রফিক ও কালামসহ ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী, জাল ফেলার কিছু সময় পরই হঠাৎ এক ঝড় ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। মুহূর্তেই ট্রলারটি দুমড়েমুচড়ে ডুবে যায়। শুরুতেই একজন জেলে ঢেউয়ের তোড়ে নিখোঁজ হন। এরপর বাঁশ ও ফ্লুটের (ভেসে থাকার সরঞ্জাম) সাহায্যে ১৪ জন ভাসতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে আরও ৫ জন ঢেউয়ের তোড়ে নিখোঁজ হয়ে যান। ভেসে ভেসে তারা শেষ বয়াসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে সোমবার রাতে দুটি মাছধরার ট্রলার ১০ জনকে উদ্ধার করে। পরে মহিপুর মৎস্যবন্দর নিয়ে আসে। কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মণ্ডল জানান, কুয়াকাটা ডিসি পার্কসংলগ্ন সাগরে একটি ট্রলারসহ জেলের লাশ ভাসছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের পরনে একটি লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট রয়েছে। গেঞ্জি-প্যান্ট দেখে সেটিকে চাচা ইদ্রিসের লাশ বলে দাবি করেন তার ভাতিজা সাগর। লাশের সুরতহাল শেষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
