ePaper

একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

ঢাকার বিমানবন্দর থেকে আসার পথে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস খালে পড়ে যায়। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের তিন মেয়েশিশুসহ সাত জন নিহত হয়। সেখানে থেকে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন গাড়িচালকসহ ৬ জন। নিহতদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের কাসালী বাড়ি। ওই বাড়ির ওমানপ্রবাসী বাহারকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসার সময় পথে বাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-প্রবাসী বাহারের মা খুরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা বেগম (৩০), মেয়ে মিম আক্তার (২), নানি ফয়জুন নেসা (৮০), ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী বেগম (৩০), ভাতিজি লামিয়া আক্তার (৯) ও রেশমি আক্তার (১০)। বেঁচে ফিরতে পারা যাত্রীরা হলেন- প্রবাসী বাহার, তার বাবা আবদুর রহিম, শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা, শ্যালক রিয়াজ, ভাইয়ের স্ত্রী সুইটি ও গাড়িচালক রাজু। একই পরিবারের সাত জনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তাদের আত্মীয়রা। ওমানপ্রবাসী বাহারের বাবা আবদুর রহিম ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে প্রায় আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে আসে। তাকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে আমরা পরিবারের সদস্যরা মিলে মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকায় যাই। মঙ্গলবার রাতেই আমরা রওনা দিই। ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজার চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে আসলে চালক মাইক্রোবাসটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। গাড়িটি রহমতখালী খালে পড়ে যায়। গাড়ির দরজা লক করা ছিল। আমরা ৬ জন জানালা দিয়ে বের হতে পারি। বাকিরা বের হতে পারেনি। খালে পানির তীব্র স্রোত ছিল। তাই দ্রুত গাড়িটি তলিয়ে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তারা পানির নিচে ছিল। এতে ডুবে তারা মারা যায়।’ গতকাল বুধবার সকালে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে মাতম দেখা যায়। এলাকাবাসী এবং আত্মীয়স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দিতে আসে। কিন্তু একে একে সাত জনের মৃত্যুতে স্বজনরা যেন কোনও সান্ত্বনাই খুঁজে পাচ্ছে না। বারবার বিলাপ করতে দেখা গেছে তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *