আরিফুর রহমান, মাদারীপুর
মাদারীপুর সদর উপজেলার কুমার নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের প্রতিবাদে ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেয়ার পর সাংবাদিকসহ কয়েকজনকে চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের রায়েরকান্দী শ্রীনদী গ্রামে কুমার নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছিল একটি সিন্ডিকেট। স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে ‘ডাকাত, ডাকাত’ বলে চিৎকার করলে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী ড্রেজারটি আটক করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার জেরে শনিবার বিকেলে মাদারীপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার রাজৈর উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল শিকদার। তিনি জানান, ঘটনার পর গভীর রাতে ফেসবুক লাইভে এসে স্থানীয় প্রভাবশালী ওবায়দুল ফরাজি তাকে এবং আরও দুই স্থানীয় বাসিন্দা—জিয়াউল হক বাবুল খালাসী ও পলাশ খালাসীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দেন। সোহেল শিকদার আরও বলেন, “ওবায়দুল ফরাজি নিজেকে বিএনপির নেতা দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে কুমার নদে বালু সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে থাকলেও সেখান থেকেই পুরো অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাইজ্জা ফরাজীর ছেলে ওবায়দুল ফরাজি ও তার অনুসারীরা নিয়মিতভাবে কুমার নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীর পাড় ধসে বসতভিটা ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রশাসনকে বারবার বলেও কোনো লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা নিজেরাই প্রতিরোধে নেমেছি। এলাকাবাসীর দাবি, শ্রীনদী পুলিশ ফাঁড়ির সন্নিকটে রাতের আঁধারে নির্বিঘ্নে চলে বালু তোলার কাজ। প্রতিবাদ করলে নানা রকম হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হাসান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। হুমকির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
