জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি স্থানের নয়টিই দখল করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচটি ও ব্যাংক কোম্পানি রয়েছে চারটি। বাকি একটি বিমা কোম্পানি। দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- উত্তরা ফাইন্যান্স, এনসিসি ব্যাংক, ব্যাক এশিয়া, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, আইডিএলসি, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ফাই্যান্স, প্রাইম ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স এবং পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড। এর মধ্যে সব থেকে বড় দাপট দেখিয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্স। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ টাকা। এতে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ৭৮ কোটি ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এরপর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের আর কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এর আগে ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৭ সালে ৩০ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ৩০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৫ সালেও ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ১৯৯৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৮১ হাজার ৫০৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার আছে। গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে এনসিসি ব্যাংক। কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১০ টাকা ১২ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ১২ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০২১ সালে ১২ শতাংশ নগদ ও ৪ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০২০ সালে সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ২০০০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১১১ কোটি ৪ লাখ ২৩ হাজার ৯৬টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে ৩৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪০ দশমিক ১৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৪ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ শেয়ার আছে। সর্বোচ্চ দাম বাড়ার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া। কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১৬ টাকা থেকে বেড়ে ১৯ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩ টাকা বা ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ১৫ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ১৫ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ১৫ শতাংশ নগদ এবং ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ২০০৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২৮ কোটি ২৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৪৬টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে ৫০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৯ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার আছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দাম ১১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ টাকা ১০ পয়সা বা ১৮ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০২১ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০২০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
