ePaper

৯ বছর জেল খেটে জামিন পেয়েও পরিবারের কাছে যাওয়া হলো না সাইফুল্লাহর

আরিফুর রহমান, মাদারীপুর

১৬ বছর বয়সে গ্রেফতার হয়ে ৯ বছর একটি মামলায় জেল খেটে জামিনে মুক্তি পায় কাজী খালেদ সাইফুল্লাহ। জামিনে মুক্ত হয়েও পরিবারের কাছে যেতে পারেনি সে। জেল গেট থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ১দিন পর ৫৪ ধারার মামলায় ঢাকা জর্জ কোর্টে হাজির করা হয়। তার মুক্তির জন্য মাদারীপুরে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছে হেফাজতের ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখা ও সাইফুল্লাহর মা নাজমা আক্তার। ২৬ জুন ২০১৬ রাতে ডাসারের গোপালপুর ঈদগাহ মসজিদ হতে ১৬ বছর বয়সী কাজী খালেদ সাইফুল্লাকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। ৫ দিন নিখোঁজ থাকার পর ১ জুলাই ঢাকা ডেমরা থেকে সন্ত্রাস বিরোধী এক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করা হয়। এরপর দুই মাস পরে মাদারীপুরের কলেজ শিক্ষক হত্যার চেষ্টা মামলায় সাইফুল্লাহর নাম যুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিন আইনি লড়াই করে অদৃশ্য শক্তির কারণে সাইফুল্লাহর জামিন করতে ব্যর্থ হওয়ার কথাও স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়। সন্তানের উপর অমানুষিক নির্যাতন ও জুলুম হলেও সন্তানকে কোন সহায়তা দিতে না পেরে কষ্টের কারণে সাইফুল্লাহর পিতা প্রফেসর কাজী বেলায়েত হোসেন মৃত্যু বরণ করেছে স্বারকলিপিতে এমন অভিযোগ করা হয়। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরেরদিনই ঢাকার ডেমরা থানার সন্ত্রাস বিরোধী এক মামলায় জামিন হয় সাইফুল্লাহর। গত বছর ৪ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে কলেজ শিক্ষক হত্যা মামলায় জামিন দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১২ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ জামিন স্থাগিত করে। এ বছর ১০ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট জামিন স্থাগিত আদেশ বাতিল করে। ছেলের জামিনের সকল কাগজপত্র পৌছার পরও ৫ দিনে সাইফুল্লাহকে মুক্তি দেয়নি কাশিমপুর জেল কর্তৃপক্ষ। ১০ মার্চ জেল কর্তৃপক্ষ সাইফুল্লাহকে মুক্তি দেয়ার কথা বলে। পরিবারের লোকজন জেল গেটে গেলে তাদের সামনে থেকে কাশিমপুর ১ নং গেট থেকে সাইফুল্লাহ বের হওয়ার সাথে সাথে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পরদিন ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকা জর্জ কোর্টে হাজির করা হয়। জর্জ কোর্টে জামিন চাওয়া হলেও আদালত জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। আগামী ২৪ মার্চ জামিন শুনানী করার কথা বলেছে আদালত। সাইফুল্লাহর মুক্তি চেয়ে পরিবার ও হেফাজতের ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখা সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে এবং জেলা প্রশাসকের কাছে হেফাজতে ইসলাম ও সাইফুল্লাহ’র মা নাজমা আক্তার পৃথক দুটি স্বারকলিপি প্রদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *