ePaper

৩ বছরে চালু হয়নি কোটি টাকা ব্যায়ে পানি শোধনাগার

আতিকুর রহমান খান দিপু’ বরগুনা

বরগুনা পৌর শহরের পানি সংকট নিরসনে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি পানি শোধনাগার তিন বছরে চালু না হওয়ায় তীব্র পানির সংকটে ভুগছেন পৌরবাসী। ২০১২ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা একটি পানি শোধনাগারকে কেন্দ্র করে এই প্রকল্প গ্রহণ করায় রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু হয়নি এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। খোজ নিয়ে জানাযায়, বরগুনা শহরের বাগানবাড়ি এবং থানাপাড়া রোডে নির্মিত হয়েছে দুটি ১০ লাখ লিটার ধারণক্ষমতার ওভারহেড পানির ট্যাংক। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বরগুনা পৌরসভা। এলজিইডি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। এসব জলাধারে পানি সরবরাহের কথা ছিল ১৯৯৮ সালে নির্মিত বরগুনা পৌরসভার একটি পুরনো পানি শোধনাগার থেকে। গ্রাহক ছিল অপ্রতুল থাকায় সেই শোধনাগারটি ২০১২ সালেই বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ এক যুগ ধরে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় মাদক সেবিদের আখরায় পরিনত হয়ে। রাতের আধারে কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে মুল্যবান যন্ত্রাংশ। তবুও এই পরিত্যক্ত প্লান্টকেই কেন্দ্র করে উচ্চ জলাধার নির্মাণ করা হলেও ট্যাংকগুলো এখনও অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তৎকালীন পৌর কর্তৃপক্ষ প্রকল্প চালুর আশ্বাস দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে প্রায় ৪ হাজার পানির মিটার স্থাপন করলেও সেই ট্যাংকগুলো থেকে এক ফোঁটা পানিও সরবরাহ করতে পারেনি। বর্তমানে ভূগর্ভস্থ পুরাতন লাইন দিয়ে শহরে পানি সরবরাহ করার চেস্টা করা হলেও সেটি প্রয়োজন এ-র তুলনায় অপ্রতুল। ভুক্তভোগী পৌরবাসীরা জানান, প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পানি সরবরাহ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ সময়েই ঠিকমতো পানি পাওয়া যায় না। অনেক এলাকায় পানির চাপ এত কম যে প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয় না। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সমস্যাটি আরও বেরে চলছে। চরকলোনী এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান স্বপন বলেন, এই গরমে পানির চাহিদা বেশি, অথচ পৌরসভার পানি পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে বাইরের পানি কিনে চাহিদা মেটাতে হয়। হাইস্কুল সড়কের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণের পরও আমরা ঠিকমতো পানি পাই না। পুকুরের পানিতে ফিটকিরি দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। পৌর শহরে বসবাসরত গণমাধ্যম কর্মী রমিজ জাবের টিংকু বলেন, পানি এলেও অল্প সময়েই চলে যায়। কয়েক মিনিটেই মিটার বন্ধ হয়ে যায়। তিন-চার বছর ধরে এমন চলছে। এ বিষয়ে বরগুনা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম শিপন বলেন, পুরাতন পানি শোধনাগারটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বিবেচনায় নিয়ে জলাধার নির্মাণ করা হয়েছিল। কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে এখনও ট্যাংক দুটি চালু করা সম্ভব হয়নি। বরগুনা পৌর প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস আসস্ত করে বলেন, খতিয়ে দেখে জলধারা দুটি সমস্যা চিহ্নিত করে। খুব দ্রুত সমস্যাগুলোর সমাধান করে পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। পৌরবাসী এর সুফল পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *