ePaper

১৭ বছর ধরে জমি দখলের অভিযোগ আনোয়ার উকিলের বিরুদ্ধে মহিপুরে জনতার মানববন্ধন

সৌমিত্র সুমন (পটুয়াখালী) কলাপাড়া

পটুয়াখালীর মহিপুর থানার ধূলাসার ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামে ভূমিদস্যু এ্যাড, আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জমি দখল ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছোনখোলা ও তারিকাটা এলাকার সাধারণ জনগণের আয়োজনে নয়াকাটা বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ভুক্তভোগী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, এ্যাড, আনোয়ার হোসেন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সাধারণ মানুষের জমি আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয়দের হয়রানি করছেন। ইতোমধ্যে ৩০টিরও বেশি চাঁদাবাজি ও জমি দখল সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। ভুক্তভোগী হারুন মৃধা বলেন, আমাদের হরেন্দপুর মৌজার ৫ একর জমি বহু প্রজন্ম ধরে ভোগদখলে রয়েছে। কিন্তু আনোয়ার উকিল ভুয়া দলিল দেখিয়ে সেই জমি নিজের নামে নিতে চায়। এরপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি, আমি আর পারছি না। কোর্টের বারান্দায় দৌড়াতে দৌড়াতে আমি পাগল হয়ে গেছি। আনোয়ারের মিথ্যা মামলা থেকে আমি বাঁচতে চাই। আরেক ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা গরিব মানুষ, কোর্ট-কাচারিতে ঘুরতে ঘুরতে নিঃস্ব হয়ে গেছি। তবু ন্যায়বিচার পাই না। প্রশাসনের কাছে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। ভুক্তভোগী মিরাজ হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে নিজের ঘেরের মাছ নিজে ধরে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এর আগেও ২৫-৩০টা মামলা দিয়েছে। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ, ন্যায়বিচার চাই। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৌলতলী মৌজার প্রায় ৫ একর জমি মোকলেছুর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর ওয়ারিশগণÑদুলাল, জাফর, জামাল, খলিল, খালেদা, পারভীন, কুলসুম, রাবেয়া, সাফিয়া, জাহেদা, সোহাগ ও মোর্শেদাÑআইনগত মালিক। এছাড়া, হরেন্দপুর মৌজার ৫ একর জমির মালিক ইউসুফ মুন্সী পরিবারের সদস্যরাÑইদ্রিস, মরিয়ম, তহমিনা, মোকসেনা, নাসিমা, আসমা ও হারুন মৃধা। অভিযোগ রয়েছে, আনোয়ার উকিল এসব জমির খতিয়ান ও রেকর্ড জালিয়াতি করে নিজের নামে রেকর্ড করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বৌলতলী মৌজার ৩২/৩৯ খতিয়ান নম্বর ৩১৬৪, ৩১৭৭ থেকে ৩১৮৬ পর্যন্ত এবং হরেন্দপুর মৌজার খতিয়ান নম্বর ৭০২-৩ সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে চলমান। স্থানীয়রা জানান, আনোয়ারের বিরুদ্ধে কথা বলায় খলিল, জাহাঙ্গীর, ইদ্রিসসহ প্রায় ৩০ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের ঘেরের মাছ ধরে ফেলার অভিযোগে স্থানীয়দের নামে ৩০ লাখ টাকার একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এমনকি নিজের চাচাকেও ছাড় দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এ্যাড, আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে হত্যা চেস্টার মামলার আসামীরা এ মানববন্ধন করছে। এরা যাবলছে সবকিছু মিথ্যা। উল্টো আরো ১০/১২ বছর যাবৎ আমাকে হয়রানি করে এলাকা ছাড়া করছে। এদের কাছে আমার এবং আমার পরিবারের কারো জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমিও আইনের কাছে সঠিক বিচার চাই। মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে ভূমিদস্যু এ্যাড, আনোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *