হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ ; মঙ্গলবার বৃষ্টি হলে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে

সুমন পল্লব

হাটহাজারী প্রতিনিধিঃপ্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে সামান্য নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালের দিকে হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার আমিনুল ইসলাম হালদা নদীতে মা মাছ সামান্য নমুনা ডিম ছাড়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের নাপিতের ঘাট থেকে মুরু করে গড়দোয়ারা ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকার কিছু অংশে সামান্য পরিমাণে নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। নয়ারহাট কুম এলাকার শহীদুল্লাহ্, ইউনূছ মুন্সি ও কাদের, কাটাখালি স্লুইছ গেট এলাকায় হাসান, রামদাস হাট এলাকায় ইকবাল, মাছুয়াঘোনা স্লুইস গেইট এলাকার হোসেন খুব সামান্য নমুনা ডিম সংগ্রহ করেন। ইংরেজি এপ্রিল মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত মৌসুম। মৌসুমের আমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে নদীতে ঢলের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় আর এতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্ত দীর্ঘদিন বৃদ্ধিপাত না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে দুইটি তিথি চলে গেলেও গত এপ্রিল মাসে মা মাছ নদীতে ডিম ছাড়িনি। গত কয়দিন থেকে দিনের বেলায় ও রাতে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি বিভিন্ন স্হানে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাছাড়া গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দমকা হাওয়া, বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ হওয়ায় হালদা নদীতে ঢলের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও হালদা গবেষক ড. মো.শফিকুল ইসলাম জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে হালদার মৎস্য সম্পদের উপর। এর প্রভাবে বিগত কয়েক বছর হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমেছে। এদিকে ৪র্থ অমাবস্যার জোঁ বা তিথীতে হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। এই অমাবস্যার জোঁ চলবে (২৫-২৯) মে। আজ মঙ্গলবার রাতে পুরোদমে ডিম ছাড়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, অনুকূল পরিবেশ না পেলে এই জোঁ’তে পুরোদমে ডিম না ছাড়লে পরবর্তী পূর্ণিমার জোঁ’তে (৮-১৪) জুন ডিম ছাড়বে কার্প জাতীয় মা মাছ। হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, গতকাল গভীর রাতে হালদা নদীর কয়েকটি স্থানে ৫০-৬০ টি নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। আশা করা যাচ্ছে আজ মঙ্গলবার বৃষ্টি হলে মা মাছ নদীতে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান মঙ্গলবার সকালের দিকে এ প্রতিবেদককে জানান, পরিবেশ অনুকূলে থাকলে হালদায় এবার আশানুরূপ ডিম পাওয়া যাবে। এদিকে নদী থেকে আহরিত ডিম থেকে রেণু ফোটানোর জন্য সরকারি হ্যাচারিগুলো ইতিমধ্যে সংস্কার ও প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *