নিজস্ব প্রতিবেদক:
এ বছরে রমজানে সুনামগঞ্জে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ভোক্তারা বলছেন, গত ১০ বছর রামজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেত। কিন্তু এবছর ভোগ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে । সুনামগঞ্জ শহরে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে ভোগ্যপণ্যের দাম এবার অন্যন্য বছরের তুলনায় কম হওয়ায় ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। শহরের পুরাতন জেল রোডের গৃহীনি রেহেনা বেগম জানান, এবছর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হওয়ায় একটু স্বাছন্দ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে পারছেন। একই বাজারে দেখা হয় সুনামগঞ্জ পৌর ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক মো. ওসমান গনীর সঙ্গে ।ওসমান গনী বাসসকে জানান, এবারের রমজানে সোয়াবিন তেল তেমন পাওয়া যায়নি। তবে দাম ছিলন নাগালের মধ্যে। তিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ছিল স্থিতিশীল ।
হাসন রাজার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান তাছাদ্দুক রাজা চৌধুরী ইমন বাসসকে জানান, এবার রমজানে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের বাজার স্বস্তির ছিল। তিনি বাজার স্থিতিশীল থাকায় সরকার ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। আগামীতে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার প্রত্যাশা করেন তিনি। পুরাতন জেল রোডের মুদি ব্যবসায়ী অজয় রায় বাসসকে জানান, এবছর নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের দাম না বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তির ভাব লক্ষ্য করা গেছে। কোনা হায় হুতাশ ছিল না। স্বাছন্দ্যে ক্রেতা কেনাকাটা করতে পারছেন। সুনামগঞ্জ কিচেন মার্কেটের শুটকি ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বাসসকে জানান, এবার রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়েনি। বাচ্চু মিয়া শুটকি ব্যবসায়ী হলেও অন্যান্য নিত্যপণ্যের একজন ক্রেতা তিনি জানিয়ে বাসসকে জানান, এ রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামে স্বস্তির রয়েছে। স্টেশন রোডের বিশিষ্ট মুদি দোকানী গৌরাঙ্গ দে’র একই বক্তব্য। তিনি বাসসকে জানান, রজমানের শুরুতে সোয়াবিন তেলের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। বর্তমানে সরবরাহ বেড়েছে।ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার বাসসকে জানান, গত রমজানে পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি ছিল। এবার রমজানে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা উপর উঠেনি।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি, ছোলা ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি কোন কোন ক্ষেত্রে ১১০ টাকা কেজিও বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পুই শাক, ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, খিরা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, শশা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, আলু ২০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) এর সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মো. দিলোয়ার হোসেন বাসসকে জানান, বিগত ১০বছরের মধ্যে এবছর নিত্যপণ্যের বাজার ছিল স্থিতিশীল। নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের দাম ছিল সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। এবছর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকায় সরকার ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বাসসকে জানান, নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়েক দফা সভা করেছে। এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় গঠিত বাজার মনিটরিং কমিটির সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। শুধু তাই নয় রমজানে বাজার পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হয়েছে। বর্তমানেও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সুনামগঞ্জের চালের দামও স্বাভাবিক রয়েছে। নিত্যপ্রণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে।জেলা প্রশাসক আরও জানান, সাধারণ ক্রেতারা যেন রমজানে কষ্ট না পায় সে বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যে দোকান খোলা হয়েছে।