সিরাজগঞ্জে তীব্র গরম/হাত পাখাই যেন একমাত্র ভরসা

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

তোমার হাতপাখার বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে আসে, কিছু সময় আরও তুমি থাকো আমার পাশে। এক সময়ের এই জনপ্রিয় গানের মতো ছিল বিদ্যুৎ বিহীন বাংলার গ্রামীণ জীবনের চিত্র। তখন গরমে হাতপাখাই ছিলো ভরসা। গরম বেড়ে গেলে এর কদরও বেড়ে যেতো। কিন্তু এখন দিন পাল্টে গেছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে এসেছে। হাত পাখার জায়গা দখল করেছে বৈদ্যুতিক পাখা। সিরাজগঞ্জ শহরের ব্যস্ততম এলাকা স্টেশন বাজার, বউ বাজার, কালিবাড়ি বাজার, বাহিরগোলা বাজার, বড় বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় হাতপাখা কিনতে ক্রেতাদের ভীড় দেখা যায়। আগে যে হাতপাখা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হতো বর্তমানে তা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চলমান তাপ প্রবাহের মধ্যে প্রচন্ড গরমে ও বাইরে প্রখর সূর্যতাপে টেকা দায়। গরমে খেটে খাওয়া মানুষদের হাঁসফাঁস অবস্থা। তাছাড়াও প্রাণীকুলেরও খারাপ অবস্থা। প্রচন্ড গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে সিরাজগঞ্জের নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত অবস্থায় কদর বেড়েছে হাত পাখার। আগের দিনে গরম থেকে স্বস্তি পেতে হাতপাখা ছিল সবার ভরসা। বর্তমানে প্রতিটি বাসা-বাড়িতে রয়েছে বৈদ্যুতিক পাখা। কেউ কেউ ব্যবহার করছেন এসি। প্রচন্ড গরমে লোডশেডিং বেড়েছে। দিন-রাত মিলিয়ে বেশ কয়েক ঘন্টা ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। প্রচন্ড গরমে ও লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকেই ফেরি করে হাতপাখা বিক্রি করছেন। আর গরমের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য গ্রাম এলাকার মানুষেরা একটু স্বস্থি পাওয়ার জন্য নামছে ডোবা, নালার পানিতে। শহরের হাতপাখা ব্যবসায়ী খালেক বলেন, ১০-১২ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ শহরে হাতপাখা বিক্রি করি। সেই টাকায় আমার চলে সংসার। তিনি আরও বলেন, আমার মতো অনেকেই হাতপাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। এবছর গরম শুরুর প্রথম থেকেই বেড়েছে হাতপাখা কারিগরদের ব্যস্ততা।’ প্রতি পিস ৭০-৮০ টাকা করে বিক্রি করি। পাখা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাতপাখা সবসময় পাওয়া যায় না, তাই একটা কিনলাম। দিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ থাকেনা সে সময় পাখা না হলে চলে না। বিদ্যুতের যে অবস্থা তাতে এখন গরমে পাখাই ভরসা। শহরের বাসিন্দা হানিফা বেগম বলেন, দুটি তালের পাতার পাখা কিনলাম। এ গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তো লেগেই আছে। তাই পাখার কোনো বিকল্প নেই। পাখার বাতাসও অনেক প্রশান্তি দেয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বলেন, আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ তাপদাহ অব্যাহত থাকবে কিছুদিন। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপদাহ চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *