ePaper

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক-ভোগান্তিতে কৃষক

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আশঙ্কাজনক হারে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক বেড়েই চলেছে ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এতে বিদ্যুৎবিহীন থেকে ভোগান্তির পাশাপাশি নতুন ট্রান্সফরমার সংযোজনে লাখ লাখ টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে গ্রাহকদের। উপজেলার তালম ইউনিয়নের চৌড়া গ্রামে মো. নাজির উদ্দিনের খামার বাড়ির সামনের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে থাকা ট্রান্সফরমার চুরি হয়। একই রাতে পাশের জমির মাঠে থেকে মো. হাবিল উদ্দিন ও মো. নজিম উদ্দিনের খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে। চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে লোহার শিকল দিয়ে ট্রান্সফরমার বেঁধে রেখেছেন এলাকাবাসী। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিয়ম অনুযায়ী, চুরি হওয়া এলাকায় নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য ট্রান্সফরমারের দামের অর্ধেক পরিশোধ করতে হয় গ্রাহকদের। আর দ্বিতীয়বার চুরি হলে ট্রান্সফরমারের মূল্যের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে হয় গ্রাহকদের; যা দরিদ্র গ্রাহকদের জন্য খুব কষ্টের। যেকোনো মূল্যে চোর চক্রকে শনাক্ত করতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন গ্রাহকেরা। ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে বিদ্যুৎবিহীন থাকা গ্রাহক চৌড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নাজির উদ্দিন জানান, ‘আমাদের ট্রান্সফরমারটি চুরি হয়ে যায়। তিনদিনেও বিদ্যুৎ পাইনি। কারণ, ট্রান্সফরমারের মূল দামের অর্ধেক অর্থ্যাৎ ২২ হাজার টাকা আমাদের দিতে হবে। এত টাকা একবারে জোগাড় করা খুবই কষ্টের। ট্রান্সফরমার চুরি এড়াতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শামসুজ্জামান। তিনি জানান, চুরির খবর পাওয়ার পরেই গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট থানায় আমরা মামলা করতে বলেছি। এখনও কোনো চোরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে চুরি ঠেকাতে গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের সচেতনতা জরুরি। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি চুরির ঘটনা একই রকম। চোরেরা ট্রান্সফরমারের ভেতরে থাকা মূল্যবান তামার তার নিয়ে ধাতব গোল বাক্স ও তেল ফেলে চলে যায়। ভাঙারির দোকানগুলোতে নজরদারি বাড়াতে পারলে চোর ধরা সম্ভব বলে মনে করেন পল্লী বিদ্যুতের এই কর্মকর্তা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তাড়াশ জোনাল অফিস তথ্য অনুযায়ী, গত নয় মাসে তাড়াশে ২৮টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর বেশির ভাগ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার। এতে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন কয়েক হাজার গ্রাহক। চুরি যাওয়া ২৮ ট্রান্সফরমারের আর্থিক মূল্য ৩০ লাখ ৯০ হাজার ৯৮০ টাকা। তাড়াশ থানার ওসি (তদন্ত) রুপু কর জানান, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। চোরদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। অল্প সময়ের মধ্যে চোর চক্রকে শনাক্ত ও আটক করা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *