ePaper

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার রেলপথ ও নদী শিমুলের সাজে সজ্জিত

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া-সলপ রেলপথ ও করতোয়া নদী এখন শিমুলের সাজে সজ্জিত। উল্লাপাড়ার ঘাটিন রেলসেতু থেকে সলপ স্টেশন পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ও ঘাটিনা রেলসেতু নিচ দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীর দুইপাড় এক কিলোমিটার সারি সারি শিমুল গাছে ফুটে উঠেছে লাল বর্ণের ফুল। বসন্তের বাতাসের তালে তালে দোল খাচ্ছে শিমুল। শিমুল ফুলের আকর্ষণে হাজারো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে এখানকার রেল ও নদী পথ। সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সী ভ্রমণপিপাসুদের কাছে উল্লাপাড়া এই এলাকা প্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থানটি প্রকৃতি প্রেমীদের যেন হাতছানি দেয়। বহু দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা এখানে আসেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যেমন আসেন পাশাপাশি পরিবারের লোকজন নিয়েও অনেকেই এখানে বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে বিকেলে ঘাটিনায় করতোয়া পাড়ে যেন মানুষের মেলা বসে। আর সেই সুবাদে শিশু-কিশোরদের আনন্দ দেওয়ার জন্য নাগরদোলাও বসিয়েছে। আনন্দে মাতছে ছেলে-মেয়েরা। সরেজমিনে ঘাটিনা রেলসেতুর পাশে গিয়ে দেখা যায়, শত শত নারী-পুরুষ শিমুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছেন। কথা হয় সদাই থেকে আসা নাজমুল হক, বেতবাড়ী থেকে আসা সাকিব হোসেন, সলঙ্গা থেকে আসা বৃষ্টি খাতুন ও স্কুল শিক্ষিকা শিউল বেগম, জাকিয়া রুপম ও ছন্দা তলাপাত্রের সাথে। তারা জানান, কয়েক বছর ধরে এসময় তারা ঘাটিনায় করতোয়া পাড়ে রেলসেতু এলাকায় শিমুল ফুলের নান্দনিকতা দেখতে আসেন। সেই সাথে উপভোগ করেন ফুলে ফুলে ছাওয়া গাছের ডালে ঘুরে বেড়ানো নানা রকম পাখির কলতান। কিন্তু ১৫/২০ দিনের বেশি শিমুল গাছগুলোতে ফুল থাকে না। ফল ধরতে শুরু করলেই ফুলের পাপড়িগুলো ঝরে পড়ে। তখন আর সৌন্দর্য থাকে না। ঘটিনা রেলসেতুতে স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক স্থান। পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সিরাজগঞ্জের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ হয় এখানে। সেই যুদ্ধের একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে সেতুর পূর্ব পাড়ে। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. সামসুল আলম জানান, এলাকাবাসী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখানে শিমুল গাছগুলো রোপণ করে। রক্তঝরা মার্চে শিমুল ফুলগুলো সেই যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *