জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
চলছে অমর একুশে বইমেলা। কিন্তু মেলায় ক্রীড়াঙ্গনের নেই কোনো স্টল। তেমনি নেই ভালো মানের লাইব্রেরীও। ক্রীড়ানুরাগী পাঠক, সাংবাদিক, ক্রীড়াবিদ, গবেষক যে বই পড়ে কোনো বিষয়ে জানবে সেই ব্যবস্থা ক্রীড়াঙ্গনে নেই। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম অভিভাবক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিষয়টি অনুধাবন করে তাদের লাইব্রেরীর মান উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম (এনডিসি), ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের বই নিয়ে একটি তালিকার জন্য তিন সদস্যে কমিটি গঠন করেন। বিশিষ্ট ক্রীড়া গবেষক ও ক্রীড়াজগতের সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান দুলাল এই তালিকা প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান, সহকারী পরিচালক ক্রীড়া সদস্য এবং ক্যাটালগার সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন। এই কমিটি ক্রীড়া সম্পর্কিত ৯২ গ্রন্থের নাম, প্রকাশনা সংস্থাসহ তালিকা প্রণয়ন করে দাখিল করেছে।
বাংলাদেশের অন্যতম কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ জোবেরা রহমান লিনুর ‘জীবনজালের এপার-ওপার’ দুই ক্রীড়া সাংবাদিক বদিউজ্জামান মিলন এবং সুদীপ্ত আনন্দ’র যথাক্রমে ‘বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল:অপরাজিতা’ , ‘স্বপ্ন ছোয়া সোনার কন্যারা’ এই তিনটি বই চলতি ক্রীড়াঙ্গনে খুব আলোচিত। দুই ক্রীড়া সাংবাদিক মিলন এবং আনন্দ বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের গ্রামীণ সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য আনার গল্প তুলে ধরেছেন। খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচ, তৃণমূলের সংগঠকদের অবদান এবং সম্পৃক্ততাও উঠে এসেছে তাদের গ্রন্থে।
সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দল ছাড়াও নারী ফুটবলের কন্টাকীর্ণ ইতিহাস এবং নারী ফুটবল দলের ফলাফল পরিসংখ্যানও রয়েছে এই দুই গ্রন্থে। বদিউজ্জামানের গ্রন্থটি গত রোববার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গনে ‘স্বপ্ন ৭১’র সামনে মোড়ক উন্মোচন করেন সাফজয়ী নারী ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা। এ সময় আরেক নারী কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ কামরুন্নাহার ডানাও উপস্থিত ছিলেন। সুদীপ্ত আনন্দ শনিবার বাফুফে ভবন প্রাঙ্গনে সাবিনা, ঋতুপর্ণাসহ আরো অনেক চ্যাম্পিয়ন নারী ফুটবালের হাতে ‘স্বপ্ন ছোয়া সোনার কন্যারা’ বইটি তুলে দেন। তার গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে অনন্যা প্রকাশনী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তালিকায় সাবিনাদের নিয়ে লেখা দুইটি বই ছাড়াও আরো ৯০টি বই তালিকাবদ্ধ হয়েছে। বর্ষীয়ান ক্রীড়া সংগঠক আনিসুর রহমান, সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক লুৎফর রহমান মাখন, সাবেক ক্রিকেটার দেবব্রত পাল, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, জোবেরা রহমান লিনু, ক্রীড়া সাংবাদিক দিলু খন্দকার, উৎপল শুভ্র, মোস্তফা মামুন, প্রয়াত ক্রীড়া সাংবাদিক অঘোর মন্ডল, মাসুদ আলম, শামীম চৌধুরি, ইমরুল কবীর সুমন, নোমান মোহাম্মদ, মোরসালিন আহমেদ, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, শামসুজ্জামান শামস, ক্রীড়া লেখক বদরুল হুদা চৌধুরি, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, নাজমুল হক তপন, নাইর ইকবাল, টি এম ইসলাম তারিকসহ ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট আরো অনেকের প্রকাশিত গ্রন্থ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তালিকাবদ্ধ হয়েছে।
বাংলায় অসংখ্য বই প্রকাশ হলেও ক্রীড়া বিষয়ক ইংরেজীতে বই খুবই কম। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়া সাংবাদিক আজাদ মজুমদার ‘ইনসাইড দ্য প্রেস বক্স’ প্রকাশ করেছেন। এই ইংরেজী বইটিও রয়েছে এনএসসির তালিকায়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তালিকাবদ্ধ গ্রন্থগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশকের কাছ থেকে ক্রয় করে লাইব্রেরীতে সংকুুলান করবে শীঘ্রই।